Random Posts

দেবতাখুম - ভ্রমন গাইড, দেবতাখুম রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) যাওয়ার উপায় । Debotakhum - Bandarban । Rowangchori

দেবতাখুম - ভ্রমন গাইড (রোয়াংছড়ি , বান্দরবান) 



দেবতাখুম বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। বিশাল পাথুরে দুই পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া গভীর ঝিরিপথ, বুনো পরিবেশে অসম্ভব ভালো লাগার মত একটি যায়গা । বড় বড় দুই পাহাড়ের মাঝখানের এই খুম (গর্ত/যেখানে পানি জমে) ভিতরের দিকে একদমই অন্ধকার। সূর্যের আলো খুবই সংকীর্ণ। স্থানীয়দের মতে প্রায় ৫০-৭০ ফুট গভীর এই খুমের দৈর্ঘ্য ৬০০ ফুট । দেবতাখুমের  ট্রেইল যেমন সুন্দর তেমনি ভয়ংকর একটি ট্রেইল। বর্ষায় এই ট্রেইলের  রূপে যেমন আপনার চোখ আটকাবে তেমনি পিচ্ছিল এবং ভয়ংকর পাথুরে পথে  বড় ধরনের বিপদে পড়ার আশঙ্খা থেকে যায় পদে পদে। একধম নেটওয়ার্কের বাহিরে  চার পাশে নিস্তব্ধ সুনসান নিরাবতা, যেন এক ভূতুড়ে পরিবেশ। পাথুরি পাহাড়ের  ফোটা ফোটা পানির শব্দে আরো ভূতুড়ে মনে হবে পরিবেশটা। ঝিরির দুই পাশে  বিশাল দুটি পাহাড়ের মাঝ দিয়েই চলে গেছে পথ যা ভেলায় করে পাড়ি দেয় পর্যটকেরা ।  

কিভাবে যাবেনঃ

দেবতাখুম যেতে হলে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গা থেকে প্রথমে আসতে হবে বান্দরবান। বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ি বাজার যাওয়ার জন্য বাস,চাঁদের গাড়ি , সিএনজি,অথবা মাহিন্দ্রা পাবেন। সে ক্ষেত্রে বান্দরবান থেকে যাওয়া আসা মাহিন্দ্রার ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ২৫০০ হাজার টাকা। যেতে পারবেন ৬-৭ জন আর চান্দের গাড়ির ভাড়া পড়বে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা যেতে পারবেন ১২-১৩ জন। বাসে যেতে চাইলে বান্দরবান শহরের রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে রোয়াংছড়ি যাওয়ার বাস পাবেন । বান্দরবান শহর থেকে রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ডে যেতে সিএনজি/অটো পাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া ১৫-২০ টাকা নিবে। বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ি বাস ভাড়া জনপ্রতি প্রায় ৮০ টাকা । সময় লাগবে প্রায় ১ ঘন্টার মত । রোয়াংছড়ি বাজার থেকে বান্দরবানের শেষ বাস বিকাল ৫টায়। এরপর আর বাস নাই। তবে সিএনজি সবসময় পাবেন।

আর বান্দরবান শহর থেকে সরাসরি একদম রোয়াংছড়ি বাজারের সিএনজি পাবেন ৷ সিএনজি রিজার্ভ ভাড়া ৫০০ - ৬০০ টাকা নিবে । বান্দরবান থেকে প্রথমে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে রোয়াংছড়ি বাজার সেখানে থানায় এন্ট্রি করে গাইড নিতে হবে। গাইডের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন - গাইড মিঃ শিং-01689814310 (একদিনের জন্য 1000 টাকা) তারপর যেতে হবে কচ্ছপতলি বাজার সেখানে আর্মি চেকপোস্টে এন্ট্রি করতে হবে। আপনার গাইডই সব ব্যাবস্থা করবে । রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী যেতে হবে সিএনজিতে সময় লাগবে প্রায় ৩০ মিনিট । কচ্ছপতলীতে এন্ট্রি করার পর তারপর হাঁটা পথ এবং পাহাড় ট্রেকিং করে শীলবাধা পাড়া ৷ কচ্ছপতলী বাজারের পর আর দোকান পাবেন না তাই পানি, খাবার কিনতে চাইলে এখান থেকেই কিনতে হবে। শীলবাঁধা গিয়ে প্রথমে পং-সু -আং খুম পার হতে হবে। পং-সু -আং  খুম পার হওয়ার পর দেবতাখুমের শুরু। স্থানীয়দের কাছে এটা হল সোনাখুম। অনেকে আবার মারমা ভাষায় থংচিখুম নামেও ডাকেন।  কচ্ছপতলী থেকে শীলবাধা পাড়ায় যেতে সমগ লাগবে ৩০-৪০মিনিটের মতন। শীলবাধা পাড়া থেকে তারপর ১০-১৫ মিনিট হাঁটলেই দেবতাখুম।

কচ্ছপতলীতে গিয়ে গাইডসহ আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয়পত্রের/পাসপোর্ট এর দু কপি ফটোকপি রাখা আবশ্যক । দেবতাখুমে ঘোরার জন্য ভেলার ব্যাপারে গাইডকে আগেই বলে রাখতে হয়। কচ্ছপতলী তে শুধু মাত্র রবি/এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক পাবেন । দেবতা খুম পর্যন্ত যাওয়া আসার পথে আপনি সম্পূর্ণ নেট ওয়ার্কের বাইরে থাকবেন। দেবতাখুম যাওয়ার পথে শীলবান্ধা ঝর্না নামে একটা ঝর্না পাবেন। যাওয়ার পথে ঝর্নাটা দেখে যেতে ভুলবেন না । বর্ষাকালে ঝর্না এবং খুমের আসল সৌন্দর্য দেখা যায়। তবে শীলবান্ধা ঝর্নার পরের ট্রেকিংটা খুবই চ্যালেঞ্জিং কারন ঝিরিপথ খুবই পিচ্ছিল থাকে । নতুন ট্রেকারদের বর্ষাকাল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো কারন বর্ষায় এর ট্রেইলের রুপ ভয়ংকর হতে পারে । শীতে ভয়ংকর রুম দেখা না গেলেও দেবতাখুমের পানি বেশ স্বচ্ছ, রং সবুজ থাকে।



এক ঘণ্টার পাথর, বালি আর অরণ্যের ঝিরিপথ ট্রেকিং শেষে আপনি যখন ভেলা নিয়ে চলতে থাকবেন সামনের দিকে, মনে হবে সৃষ্টিকর্তা আপনার জন্য কতই না সুন্দর পৃথিবী তৈরি করে দিয়েছেন! দুই পাশের দুই পাহাড়ের আকাশচুম্বী পাথুরে দেয়ালের ভেতরকার গর্ত বা গুহা পথ । যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে না, নিজের মুখের কথা কিংবা চিৎকার প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে নিজেরই কাছে, উঁচু পাহাড়ের উপর থেকে টুপ-টাপ পানি পড়ার মৃদু শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ বা কোলাহল নেই, বরফ-শীতল ঠাণ্ডা কিন্তু স্বচ্ছ পানির ধারা আর পাথুরে ঝর্ণা, সবমিলিয়ে নৈসর্গিক কিছু মুহুর্তের সাক্ষী হবেন আপনি

দেবতা খুম গেলে যা যা দেখবেনঃ

সেখানে আপনি মনমুগ্ধকর শিলা-বান্দা ঝর্না দেখতে পারবেন। অসম্ভব সুন্দর একটি ঝর্না। ঝর্ণার পানিতে গোসল করলে শরীর মন দুটোই ঠান্ডা হয়ে যাবে। সেখান থেকে ঝিরি খাল পার হয়ে শিলাবান্দা পাড়া গিয়ে আপনাকে নৌকার বা ভেলার জন্য টিকেট নিতে হবে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। তারপর নৌকা বা ভেলা নিয়ে দেবতাখুমের অসম্ভব সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।



খরচপাতি:

ঢাকা থেকে বান্দরবান এর বাস ভাড়া ৭০০ টাকা জনপ্রতি (নন এসি বাস)।এসি বাসের ভাড়া ১৩০০ - ১৬০০ টাকা । বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ি বাস ভাড়া ৮০ টাকা জনপ্রতি।বান্দরবান থেকে কচ্ছপতলী চান্দের গাড়ি ভাড়া সারাদিনের জন্য ৩৫০০-৪০০০ টাকা । আর বান্দরবান শহর থেকে সরাসরি একদম রোয়াংছড়ি বাজারের সিএনজি পাবেন ৷ সিএনজি রিজার্ভ ভাড়া ৫০০ - ৬০০ টাকা নিবে । কচ্ছপতলী থেকে রোয়াংছড়ি সিএনজি ভাড়া আনুমানিক ১৫০-২০০ টাকা। নৌকা পারাপার, লাইফ জ্যাকেট এবং ভেলা ভাড়া ১৫০ টাকা । গাইডের খরচ ১০০০ টাকা।

বিকেল ৫ টার আগে কচ্ছপ তলি বাজার আর্মি ক্যাম্পে ফেরত আসতে হবে। সেখান থেকে বান্দরবান ফিরে রাতের বাসে ঢাকায় চলে আসতে পারবেন। ইচ্ছে করলে এক দিনেই দেবতাখুম থেকে ঘুরে আসা যাবে।



কোথায় খাবেনঃ

শিলাবান্ধা পাড়ায় খাবারের ব্যবস্থা আছে সেখানে দুপুরের খাবার খেতে পারেন। অথবা কচ্ছপতলি বাজার ফিরে আদিবাসীদের ঘরে অল্প খরচে অত্যন্ত ভালমানের খাবার খেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেনঃ

বান্দরবন থেকে সাধারনত এক দিনেই দেবতাখুম ঘুরে আসা যায়। এরপরেও কেউ থাকতে চাইলে কচ্ছপতলী বাজার থাকার ব্যবস্থা আছে


Vlog Tag: দেবতাখুম,debotakhum,bandarban,দেবতা খুম বান্দরবান,debota khum bandarban,দেবতাখুম ভ্রমণ,bandarban trekking,debotakhum tour,debotakhum bandarban,debtakhum,debotakhum rowangchori,mr.360backpacker,debotakhum tarvel,দেবতাখুম ভ্রমন,বান্দরবানের সবচেয়ে বড় খুম,roangcchari debotakhum,শিলবান্ধা পাড়া,দেবতা খুম,debotakhum rowangcchari,দেবতাখুম বান্দরবান,দেবতাখুম রোয়াংছড়ি,দেবতাখুম রোয়াংছড়ি বান্দরবান,debotakhum shilbandha para,debotakhum trip,day trip debotakhum

Post a Comment

0 Comments