নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ গাইড (Nijhum Dwip Travel Guide):
বঙ্গোপসাগরের কোলে মেঘনার শাখা নদী এবং অসংখ্য শ্বাসমূলে ভরা কেওড়া বন ও বালুচরবেষ্টিত সমুদ্র সৈকতের নিশ্চুপ ছোট্ট সবুজ একটি ভূখণ্ডের নাম নিঝুম দ্বীপ। এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা ছোট্ট একটি ভূ-খণ্ড। ‘দ্বীপ’ বলা হলেও এটি মূলত একটি ‘চর’। এক সময় এটিকে চর ওসমান বা বল্লার চরও বলা হতো। বেশ কয়েকটি ছোট চরের সমন্বয়ে ১৯৫০ সালের শুরুর দিকে এ দ্বীপাঞ্চলটি জেগে ওঠে, যার আয়তন প্রায় ১৪,০৫০ একর। ১৯৭৯ সালে সাবেক মন্ত্রী আমিরুল ইসলাম কালাম এটিকে নিঝুম দ্বীপ নামে নামকরণ করেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের আগ পর্যন্ত এখানে কোনো লোকবসতি ছিলো না,তাই দ্বীপটি নিঝুমই ছিলো। পরবর্তীতে সত্তরের দশকে বন বিভাগের কার্যক্রম শুরু হলে এখানে বসতি গড়ে উঠে ।
এখানে হাজার পাখির কিচিরমিচির শব্দ, বালুচরে
তার মাঝে দাঁড়ানো সারি সারি খেজুর গাছ,মায়াবী হরিনের পদচারনায়
মুখরিত হয় চারপাশ,মাইলের পর মাইল সারি সারি কেওড়া গাছ
, সমুদ্রের বুকে হেলে
পড়ে অস্তগামী রক্তিম সূর্য । যেন সবুজের মায়াবী গালিচা বিছিয়ে দেয়া হয়েছে সমুদ্রের তলানী
পর্যন্ত। নিঝুম
দ্বীপ- সত্যিই নিঝুম,নিশ্চুপ। একবারেই আলাদা ।
![]() |
ছবিঃ নিঝুম দ্বীপ কমলার চর (Nijhum Dwip Komolar Char) |
নিঝুম দ্বীপের জীববৈচিত্র্যে:
শীতকালে এখানে বসে হাজার রকমের অতিথি
পাখির মেলা। রয়েছে কেওড়া বন । এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৪৩ প্রজাতির লতাগুল্ম এবং
২১ প্রজাতির অন্যান্য গাছ। এখানে পরীক্ষামূলকভাবে ৪ জোড়া হরিণ ছাড়া হয় হয়েছিলো। নিঝুম দ্বীপ এখন হরিণের অভয়ারণ্য। ১৯৯৬ সালের
হরিণশুমারি অনুযায়ী হরিণের সংখ্যা ছিলো ২২,০০০। এ বনে আরো আছে উদ্বিড়াল, মেছো বাঘ, বনকুকুর, সাপ, খেকশিয়াল ইত্যাদি। দ্বীপে ৩৫ প্রজাতির পাখিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
নিশি বক, কানি বক,পানকৌড়ি,ধূসর বক, কাদাখোঁচা,বালিহাঁস,নানা জাতের মাছরাঙ্গা
ইত্যাদি।
নিঝুম দ্বীপে ভ্রমণের মৌসুম:
নিঝুম দ্বীপের রাস্তায় বর্ষাকালে গেলে প্রচুর কাঁদা থাকে । বর্ষায় দ্বীপের এমাথা থেকে ওমাথা কাদপানি মাড়িয়ে পাড়ি দিতে হয় । কিন্তু গ্রীষ্মকালে গেলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ভয় থাকে। এপ্রিল থেকে সাগরে ঝড় তুফান অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে শীতকাল মানে অক্টোবর থেকে মার্চ । শীত মৌসুমে সাগর শান্ত থাকলেও বছরের যেকোনো সময় এখানে আসা যায়। নিঝুম দ্বীপে যাওয়াটা বেশ সময় ও শ্রমসাপেক্ষ, তাই বয়স্ক অথবা কম বয়সীরা সেখানে না যাওয়াই ভালো।নিঝুম দ্বীপে যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে হাতিয়ায় যাওয়ার জন্য
প্রতিদিন ২ টা লঞ্চ বরাদ্দ রয়েছে - মোট ৪ টা লঞ্চ রোটেশন পদ্ধতিতে ডেইলি ২ টা
করে ছেড়ে যায় । লঞ্চ গুলোর নাম এম.ভি ফারহান - ৩ ও ৪ এবং এম. ভি. তাসরিফ - ১ ও ২।
লঞ্চে কেবিনের জন্য যোগাযোগ:
এম.ভি. ফারহান - ৩ :১৭৮৫৬৩০৩৬৬
এম. ভি. ফারহান - ৪ :১৭৮৫৬৩০৩৭০, ০১৭৮৫৬৩০৩৬৮, ০১৭৮৫৬৩০৩৬৯
এম.ভি. তাসরিফ- ১ : ১৭৩০৪৭৬৮২২, ০১৭১০৬২৬১৭০
এম.ভি. তাসরিফ-২ : ১৭৩০৪৭৬৮২৪
ঢাকা থেকে লঞ্চে তমুরুদ্দিন ঘাটঃ
প্রতিদিন বিকাল ৫.৩০ মিনিটে ফারহান সিরিজ এবং সন্ধ্যা ৬.০০ মিনিটে তাসরিফ সিরিজ হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চ ১ মিনিট ও লেট করে না। সেগুলো হাতিয়ার তমুরদ্দী ঘাটে পৌঁছবে পরদিন সকাল ৮-৯ টায় । আর নিঝুম দ্বীপ যেতে হলে নামতে হবে হাতিয়ার এই তমুরদ্দী ঘাটে। আর ঢাকায় ফেরত আসার লঞ্চ এম ভি ফারহান ছাড়ে দুপুর ১২.৩০ টায় এবং তাসরিফ ছাড়ে দুপুর ১.৩০ মিনিটে।
বিলাশ বহুল এই লঞ্চে ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৫০০০ টাকা যেখানে আলাদা বাথরুম এবং রেফ্রিজারেটর এর ব্যাবস্তা রয়েছে । ডাবল বেডের কেবিন যার ভাড়া ১৮০০ টাকা । সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া - ১০০০ টাকা , আর এই সব লঞ্চে ডেকের ভাড়া ৩০০ টাকা। আর রাতের খাবার লঞ্চেই সেরে নিতে পারবেন । কারন এইসব লঞ্চে রয়েছে নিজস্ব ক্যান্টিন । যেখানে ১৩০-২০০ টাকার মধ্য ভালো মানের খাবার খেতে পারবেন ।
আপনারা কোন কারনে হাতিয়ার লঞ্চ মিস করলে বিকাল ৬.৩০ মিনিট এ সম্পূর্ণ নতুন ভাবে চালু করা এম ভি টিপু-৫ অথবা এম ভি পানাম ২ লঞ্চ এ করে তজুমুদ্দিন অথবা মনপুরা নেমে গিয়ে হাতিয়ার লঞ্চ ধরতে পারবেন অথবা মনপুরা থেকে ট্রলার এ হাতিয়া যেতে পারবেন।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এমভি ফারহান এবং এমভি তাসরিফ ২ টা লঞ্চই মোটামুটি সকাল ৮টা থেকে ৯ টার মধ্য তমুরুদ্দিন ঘাঁট পৌঁছে যায় । তমুরুদ্দিন ঘাঁট থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার ২ টা উপায় রয়েছে এর মধ্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ট্রলারে যাওয়া । সরকারি ছুটিতে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকায় এখানকার মাছ ধরার ট্রলার গুলো লোকাল যাত্রী নিয়ে নিঝুম দ্বীপ যায় । আর ভাড়া নেয় জন প্রতি ২০০ টাকা করে । কিন্তু সরকারি ছুটি ব্যাতিত এই সব ট্রলার পাওয়া যায় না ।
তমুরুদ্দিন ঘাঁট থেকে মুক্তারিয়া ঘাটঃ
যদি নিঝুম দ্বিপ যাওয়ার ট্রলার না পান তবে
নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাদের তমুরুদ্দিন ঘাঁট থেকে
মুক্তারিয়া ঘাঁটে যেতে হবে। মুক্তারিয়া ঘাট যাওয়ার জন্য বাইক রিজার্ভ ৩০০-৪০০ টাকা । তবে দামাদামি করে নিতে ভুলবেন না । তমুরুদ্দিন
ঘাঁট থেকে মুক্তারিয়া ঘাঁট যেতে প্রায় ২ ঘন্টার মত সময় লাগে । তমুরুদ্দিন ঘাঁট
থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার জন্য ট্রলার সবসময় পাওয়া না গেলেও বাইক কিন্তু সব সময় পাওয়া যায় ।
মুক্তারিয়া ঘাঁট থেকে বন্দরটিলা ঘাঁটঃ
নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার জন্য মুক্তারিয়া ঘাঁট থেকে ট্রলার যোগে বন্দরটিলা ঘাঁটে
যেতে সময় লাগে ২০ মিনিট আর ভাড়া নেয় ২০ টাকা , স্পিড বোর্ডে যেতে সময় লাগে মাত্র ২-৩ মিনিট ভাড়া নেয়
৬০ টাকা । আর ঘাঁট ফি নেয় ৩ টাকা ।
বন্দরটিলা ঘাট থেকে নিঝুম দ্বিপ নামার বাজারঃ
বন্দরটিলা ঘাঁট থেকে নিঝুম দ্বীপ নামার বাজার যেতে সময় লাগে
প্রায় ২০ মিনিট আর বাইক রিজার্ভ ১০০ টাকা ।
![]() |
ছবিঃ নিঝুম দ্বীপ চৌধুরী খাল (Nijhum Dwip chowdhury Khal) |
বাসে অথবা ট্রেনে নিঝুম দ্বীপে যাওয়ার উপায়:
আর লঞ্চে যেতে না চাইলে বাসে/ট্রেনে নোয়াখালীর সোনাপুর / মাইজদি হয়ে হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায় । ঢাকা
থেকে বাসে একুশে অথবা ইকোনো পরিবহনের বাসে যেতে হবে নোয়াখালীর সোনাপুরে। প্রতিদিন
মোটামুটি সকাল দুপুর ও সন্ধ্যায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে নোয়াখালীর
সোনাপুর এর দিকে বাস ছেড়ে যায়, আবার ধানমন্ডি জিগাতলা কাউন্টার থেকে
ফকিরাপুল হয়ে একুশে পরিবহনের বাস ছাড়ে রাত ১০.২০ মিনিট।
আপনি ট্রেনে যেতে পারেন নোয়াখালীর মাইজদি
পর্যন্ত। ঢাকা কমলাপুর থেকে বৃহস্পতি বার বাদে, প্রতিদিন
বিকাল ৪.২০ মিনিট এ
৭১২ নং আন্তঃনগর উপকুল এক্সপ্রেস নোয়াখালী এর দিকে ছেড়ে যায়, মাইজদি পৌঁছে রাত ১০.২২ মিনিট। ভাড়া ২৩০ থেকে ৫০৩ টাকা।
নোয়াখালীর সোনাপুর / মাইজদি থেকে লোকাল বাস বা সিএনজিতে করে নামতে হবে চেয়ারম্যান ঘাটে। সি এন জি সারাদিন চলে ভাড়া
জনপ্রতি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।
চেয়ারম্যান ঘাট থেকে সি-ট্রাক, ট্রলার ও স্পীড বোট ছাড়ে হাতিয়া চ্যানেল পাড়ি দিয়ে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে। সময় লাগে দুই ঘন্টা। সি-ট্রাক ছাড়ে প্রতিদিন সকাল ৮ টায়। ফোন নম্বর - ০১৭৫৬৮৪৬১০৬।
সি ট্রাক ভাড়া: জনপ্রতি ৮০ টাকা ।
ট্রলার ভাড়া : জনপ্রতি ১২০ - ১৫০ টাকা ।
স্পীড বোট ভাড়া: জনপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা । যাত্রীদেরকে নামাবে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে।
সেখান থেকে ট্রলারে ১৫ মিনিট লাগবে বন্দরটিলা ঘাটে জেতে । ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা। ঘাঁট ফি ৩ টাকা । এরপর মটর সাইকেল রিজার্ভ করে ছলে যেতে পারবেন নিঝুম দ্বিপ নামার বাজার ভাড়া ১০০ টাকা মটরসাইকেলে দুইজন উঠতে পারবেন। তবে দলবেঁধে গেলে ট্রলার রিজার্ভ করে সরাসরি চেয়ারম্যান ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায় ৫০০০-৬০০০ টাকায়।
চেয়ারম্যান ঘাট থেকে সি-ট্রাক, ট্রলার ও স্পীড বোট ছাড়ে হাতিয়া চ্যানেল পাড়ি দিয়ে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে। সময় লাগে দুই ঘন্টা। সি-ট্রাক ছাড়ে প্রতিদিন সকাল ৮ টায়। ফোন নম্বর - ০১৭৫৬৮৪৬১০৬।
সি ট্রাক ভাড়া: জনপ্রতি ৮০ টাকা ।
ট্রলার ভাড়া : জনপ্রতি ১২০ - ১৫০ টাকা ।
স্পীড বোট ভাড়া: জনপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা । যাত্রীদেরকে নামাবে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে।
নলচিরা থেকে নিঝুম দ্বীপ:
নলচিরা থেকে বেবিটেক্সিতে (৬০০-৭০০ টাকা) করে যেতে হবে জাহাজ মারার মোক্তারিয়া ঘাটে। সরাসরি নলচিরা ঘাট থেকে মোটর সাইকেল রিজার্ভ করেও মোক্তারিয়া ঘাট এ যাওয়া যায় ভাড়া দুই জন ৩৫০ - ৪৫০ টাকা। তাছাড়া জিপ ভাড়া নিয়ে যেতে পারবেন ৪০০০-৪৫০০ টাকার মধ্যে। ভাড়া দরদাম করে নিবেন।
সেখান থেকে ট্রলারে ১৫ মিনিট লাগবে বন্দরটিলা ঘাটে জেতে । ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা। ঘাঁট ফি ৩ টাকা । এরপর মটর সাইকেল রিজার্ভ করে ছলে যেতে পারবেন নিঝুম দ্বিপ নামার বাজার ভাড়া ১০০ টাকা মটরসাইকেলে দুইজন উঠতে পারবেন। তবে দলবেঁধে গেলে ট্রলার রিজার্ভ করে সরাসরি চেয়ারম্যান ঘাট থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায় ৫০০০-৬০০০ টাকায়।
নিঝুম দ্বীপ
গেলে যেখানে থাকবেন:
আপনারা যার নিঝুম
দ্বিপে কটেজ রিজার্ভ নিয়ে দূর চিন্তায় রয়েছেন তাদের জন্য নিঝুম দ্বিপের সবচেয়ে
জনপ্রিয় ৫ টি রিসোর্টের রিভিও আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া আছে
দেখে নেয়ার আমন্ত্রন রইলো ।
নিঝুম দ্বীপে ক্যাম্পিং করার উপায়:
ক্যাম্পিং এর সুবিধা প্রচুর। ক্যাম্পিং মূল দ্বীপেই করা ভালো। দেখেশুনে পুরা দ্বীপে যেখানে মন চায় সেখানেই তাঁবু টাঙ্গানো যাবে। জন্তু জানোয়ারের কোনো ভয় নেই। নামার বাজার বিচে নেমেই বাপাশে ঝোপগুলোর সামনে ক্যাম্পিং করতে পারেন। স্থানীয় কাউকে ক্যাম্পিং করার জন্য গাইড হিসেবে নিতে পারেন। বাজার সদাই,লাকড়ি,রান্না-বান্না ও পানির ব্যবস্থা ওরাই করবে। এমনকি রাত জেগে ক্যাম্প সাইট পাহারা ও দিবে। ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মত দিয়ে দিবেন মাঝারি বয়সের ছেলেপুলে হলে ভালো হয়। বাথরুম পাবেন নামার বাজার মাছের আড়তে। গোসল করতে পারবেন নিঝুম রিসোর্টের পিছনে ডাকবাংলোর পুকুরে।
যারা নিঝুম দ্বীপে ক্যাম্পিং নিয়ে ভাবছেন তাদের জন্য আমাদের নিঝুম দ্বীপ ক্যাম্পিং করার উপায় সম্পর্কে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ১ টি ভিডিও দেওয়া আছে দেখে নেয়ার আমন্ত্রন রইলো ।
যেখানে থাকবেন:
নামার বাজারের আসে পাশে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। সরকারি ছুটির দিনে নিঝুম দ্বিপে বেড়াতে আসলে এই সব হোটেলে আগে থেকে রিজার্ভ করে আসবেন টা না হলে রুম খালি পাবেন না । তবে সরকারি ছুটির দিন ব্যতিত নিঝুম দ্বিপে বেড়াতে আসলে আগে থেকে হোটেল বুকিং করার দরকার নেই । কারন তখন এইসব হোটেল এমনিতেই খালি থাকে । তখন নিঝুম দ্বীপ এসে দামদামি করে অনেক কম টাকায় কটেজ রিজার্ভ করতে পারবেন । অফ সিজনে রুম ভাড়ায় ৫০% ডিসকাউন্ট পাওয়া যায় ।
১) নিঝুম রিসোর্ট (অবকাশ হোটেল) নামার বাজারঃ
এটা অবকাশ পর্যটন লিমিটেড এর একটা রিসোর্ট। নামার বাজার সী বীচ এর কাছে অবস্থিত। নিঝুম রিসোর্ট নামে নিঝুম দ্বীপে থাকার জন্য একটি ভালো মানের রিসোর্ট।
এটা অবকাশ পর্যটন লিমিটেড এর একটা রিসোর্ট। নামার বাজার সী বীচ এর কাছে অবস্থিত। নিঝুম রিসোর্ট নামে নিঝুম দ্বীপে থাকার জন্য একটি ভালো মানের রিসোর্ট।
রুম ভাড়া:
২ বেড এর ভিআইপি রুম ভাড়া ২০০০ টাকা
২ বেড এর সাধারন রুম ভাড়া ১৫০০ টাকা
৩ বেড এর সাধারন রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা
৪ বেড এর সাধারন রুম ভাড়া ২০০০ টাকা
৫ বেড এর ফ্যামিলি রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা
৫ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা
১২ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা।
ঢাকা অফিসঃ অবকাশ পর্যটন লি:,আলহাজ সামসুদ্দিন ম্যানসন (নবম তলা),১৭ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা। ফোন :৮৩৫৮৪৮৫,৯৩৪২৩৫১,৯৩৫৯২৩০,০১৫৫২৩৭২২৬৯।
২ বেড এর ভিআইপি রুম ভাড়া ২০০০ টাকা
২ বেড এর সাধারন রুম ভাড়া ১৫০০ টাকা
৩ বেড এর সাধারন রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা
৪ বেড এর সাধারন রুম ভাড়া ২০০০ টাকা
৫ বেড এর ফ্যামিলি রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা
৫ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা
১২ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা।
ঢাকা অফিসঃ অবকাশ পর্যটন লি:,আলহাজ সামসুদ্দিন ম্যানসন (নবম তলা),১৭ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা। ফোন :৮৩৫৮৪৮৫,৯৩৪২৩৫১,৯৩৫৯২৩০,০১৫৫২৩৭২২৬৯।
নিঝুম দ্বীপ অফিসঃ০১৭২৪-১৪৫৮৬৪( সবুজ ভাই), ০১৮৪৫৫৫৮৮৯৯, ০১৭৩৮২৩০৬৫৫।
২) হোটেল শাহিন,নামার বাজার:
হোটেল টা নতুন। কিন্তু এর মালিক কর্মচারী গুলা সাক্ষাত ডাকাত। ১০০০ টাকার রুম ২৫০০ টাকা চাইবে।
ফোন নম্বরঃ ০১৮৬৩১৫০৮৮১
৩) হোটেল সোহেল,নামার বাজার:
রুম ভাড়া:৪ বেড এর রুম ২৫০০ থেকে ১৮০০ পর্যন্ত (রুমের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন সুবিধার জন্য ভাড়ার তারতম্য)।
যোগাযোগ: ম্যানেজারঃ ০১৮৬৮৬১২১৩৫(শাহজাহান)।
৪) মসজিদ বোর্ডিং, নামার বাজার:
এটা সবচেয়ে সস্তায় থাকার ব্যবস্থা। স্থানীয় মসজিদ থেকে এই ব্যবস্থা করেছে।
রুম ভাড়া:ডরমেটরি - ভাড়া ২০০ - ৩০০ টাকা।
এক্সট্রা ২ টা সিঙ্গেল এবং ২ টা ডবল রুম আছে,আর সব ডরমেটরি ।
যোগাযোগ: মোঃ আব্দুল হামিদ জসিম, কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, নামার বাজার।ফোনঃ ০১৭২৭-৯৫৮৮৭৯।
২) হোটেল শাহিন,নামার বাজার:
হোটেল টা নতুন। কিন্তু এর মালিক কর্মচারী গুলা সাক্ষাত ডাকাত। ১০০০ টাকার রুম ২৫০০ টাকা চাইবে।
ফোন নম্বরঃ ০১৮৬৩১৫০৮৮১
৩) হোটেল সোহেল,নামার বাজার:
রুম ভাড়া:৪ বেড এর রুম ২৫০০ থেকে ১৮০০ পর্যন্ত (রুমের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন সুবিধার জন্য ভাড়ার তারতম্য)।
যোগাযোগ: ম্যানেজারঃ ০১৮৬৮৬১২১৩৫(শাহজাহান)।
৪) মসজিদ বোর্ডিং, নামার বাজার:
এটা সবচেয়ে সস্তায় থাকার ব্যবস্থা। স্থানীয় মসজিদ থেকে এই ব্যবস্থা করেছে।
রুম ভাড়া:ডরমেটরি - ভাড়া ২০০ - ৩০০ টাকা।
এক্সট্রা ২ টা সিঙ্গেল এবং ২ টা ডবল রুম আছে,আর সব ডরমেটরি ।
যোগাযোগ: মোঃ আব্দুল হামিদ জসিম, কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, নামার বাজার।ফোনঃ ০১৭২৭-৯৫৮৮৭৯।
৫) হোটেল দ্বীপ সম্পদ,(সৈয়দ চাচার থাকা ও খাওয়ার হোটেল) নামার বাজার:
ফোনঃ ০১৭২০ ৬০১ ০২৬, ০১৭৬০ ০০৮১০৬।
৬) বন বিভাগের ডাকবাংলো:
৫০/৬০ জন পর্যটক থাকার ব্যবস্থা আছে।বন বিভাগের রেস্ট হাউজ।এটা দ্বীপের প্রথম রেস্ট হাউস।
ভাড়া প্রতিজন ২০০ টাকা।
যোগাযোগ:০১৭১১-১৭৩৪৩৪,০১৭১৫-৫৪৬৭৭২ ।
ফোনঃ ০১৭২০ ৬০১ ০২৬, ০১৭৬০ ০০৮১০৬।
৬) বন বিভাগের ডাকবাংলো:
৫০/৬০ জন পর্যটক থাকার ব্যবস্থা আছে।বন বিভাগের রেস্ট হাউজ।এটা দ্বীপের প্রথম রেস্ট হাউস।
ভাড়া প্রতিজন ২০০ টাকা।
যোগাযোগ:০১৭১১-১৭৩৪৩৪,০১৭১৫-৫৪৬৭৭২ ।
![]() |
ছবিঃ নিঝুম দ্বীপ কবিরাজের চর (Nijhum Dwip Kobirajer Char) |
খাবার দাবারঃ
নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারের কিছু হোটেল আছে । এখানে দেশি মুরগি, মাছ, হাঁস,গরুর মাংশ,সামুদ্রিক মাছ,মোটা চালের ভাত,রুটি সবই খড়ির চুলায় রান্না হয় ।
খাবার আগে থেকে অর্ডার করে রাখা ভালো। খাবার খাবেন নামার বাজারে আলতাফ চাচার হোটেল এবং সৈয়দ চাচার হোটেলে । আপনি যদি নিজের পছন্দের কিছু খেতে চান তাদের কে বললে তারা
রান্না করে দিতে পারবে । এখানে যে খাবার খেয়ে আপনি সবচেয়ে বেশি মজা পাবেন
সেটা হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ। কারণ এখানে প্রতি বেলায় আপনি একদম তাজা সামুদ্রিক মাছ খেতে
পারবেন। গাছ থেকে পেড়ে তাজা ডাব খাবেন, ২৫-৩০ টাকা। মহিষের দুধের দই আর স্পঞ্জ মিষ্টি অবশ্যই
ট্রাই করবেন। আর
প্রায় সব থাকার হোটেলে বারবিকিউ এর চুলা থাকে,হোটেলের
লোকদের বললে তারাই সব ব্যবস্থা করে দিবে। তাদের সহায়তায় অথবা নিজেরাই বানিয়ে
নিতে পারেন কোরাল/ইলিশ মাছ বা মুরগির বারবিকিউ। এ ব্যাপারে নিঝুম রিসোর্ট এর
ম্যানেজার সবুজ ভাই এক্সপার্ট ।
নিঝুম দ্বীপের দর্শনীয় স্থানঃ
১. কমলার দ্বীপ:
সেখানের খালে অনেক
ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও আশে পাশের দ্বীপগুলো অনেক সুন্দর। পুরো দ্বীপটা হেঁটে
হেঁটে দেখলে,মন ভরে যাবে ইনশাল্লাহ ।
২. চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর:
পাখি বা হরিণ দেখতে হলে খুব ভোরে উঠতে হয়। হরিণ মূল দ্বীপের চৌধুরী খালের আশেপাশে স্থানীয় গাইডদের সাথে গিয়ে দেখে আসা যায়। আরো রয়েছে কবিরের চরে হাজার হাজার মহিষের পাল। সব মিলিয়ে এই কষ্টের গভীনে লুকিয়ে আছে এক অতৃপ্ত সৌন্দর্য। এই হল নিঝুম দ্বীপ । একটা ট্রলার রিজার্ভ নিন ১৫-২০ জনের গ্রুপ এর জন্য ১০০০-১২০০ টাকা। ট্রলারের লোকেরাই হরিন দেখিয়ে আনবে,সন্ধ্যার সময় কবিরাজের চরে নেমে সূর্যাস্ত এবং মহিষের পাল দেখতে ভুলবেন না।
৩. চোয়াখালি ও চোয়াখালি সী-বিচ:
চোয়াখালি তে গেলে সকাল ভোরে হরিন দেখা যায়। মটর সাইকেল ওয়ালাকে বলে রাখবেন সকাল ভোরে আপনাকে হোটেল থেকে নিয়ে
হরিন দেখিয়ে আনবে।
৪. নামার বাজার সী-বিচ:
নামার
বাজার থেকে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট লাগে।এখান থেকে সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে
পাবেন,এখানে রাতে বারবিকিউ করে মজা পাবেন। বিচ থেকে বামে কিছু দূর হেটে ছবিতে দেখানো প্রসিদ্ধ খেজুর গাছের সারি
দেখতে এবং সকালে খেজুর রস খেতে ভুলবেন না। চাইলে এই বীচে তাবু টানিয়ে ক্যাম্পিং ও করতে পারেন ।
৬. দমার চর:
বঙ্গোপসাগরের কোলে সম্প্রতি
আরো একটি অনিন্দসুন্দর সমুদ্র সৈকত জেগে উঠেছে। এটাকে ডাকা হয় "ভার্জিন সি বিচ" বলে। নিঝুম দ্বীপের লোকজন এবং মাছ ধরতে যাওয়া
লোকেরা এই নয়নাভিরাম সৈকতকে বলে দেইলা । এই বিচ কক্সবাজরের সমুদ্র সৈকতের এর মত সুন্দর এবং আকর্ষণীয় যায়গা। নাম না জানা অনেক পাখির দেখা পাবেন খুব
সকালে যদি যান। এই চরে যেতে ট্রলার ভাড়া ৩০০০-৩৫০০ টাকা।
নিঝুম দ্বীপে হরিন দেখার উপায়ঃ
হরিন দেখতে বনে চলাচলের সময় একদম নিঃশব্দে চলতে হবে। কোনো প্রকার শব্দ অথবা উচ্চ গলায় কথা বলা যাবে না। কারণ বনের পশু পাখিদের যেকোনো শব্দ শোনার তীব্র ক্ষমতা রয়েছে। সামান্য হৈচৈ করলেই এখানে হরিণের দেখা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। জঙ্গলে ঘুরার সময় যথাসম্ভব সবাই হালকা রংয়ের সুতি পোশাক পরিধান করবেন। বন্য প্রাণীদের দৃষ্টিও খুব প্রখর হয়ে থাকে। অতি উজ্জ্বল পোশাকের পরিধানের কারণে দূর থেকেই বন্যপ্রাণীরা তাঁদের শিকার দেখে ফেলে। নিঝুম দ্বীপে হরিণ,শেয়াল এবং মহিষ ছাড়া অন্য কোনো হিংস্র প্রাণী নেই। তাই ভয় পাবার কোনো কারণ নেই।
যে যে জিনিস সাথে নেয়া প্রয়োজন:
যদি শীতের মৌসুমে নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণে যান,তাহলে সঙ্গে নিতে হবে পর্যাপ্ত শীতের কাপড়,ভালো গ্রিপের জুতা,টর্চ লাইট,ক্যামেরা, দরকারি ওষুধ, ওরস্যালাইন, পানির বোতল, গামছা ইত্যাদি। পাওয়ার ব্যাংক অবশ্যই অবশ্যই সাথে নিবেন।
নিঝুম দ্বীপে ভ্রমনের বিস্তারিত জানতে আমাদের
নিঝুম দ্বীপ নিয়ে বানানো ভিডিও সিরিজ দেখতে পারেন -
ট্র্যাভেল বাংলাদেশ টিম
সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত
ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান
অথবা আমাদের মেইল করুন chsaiful@gmail.com। আমরা ঠিক করে নিবো ।
দৃষ্টি আকর্ষণ : আমাদের পর্যটন
স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের
দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন
কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না । দেশ
আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া সহ অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ট্র্যাভেল বাংলাদেশে প্রকাশিত
তথ্য বর্তমান সময়ের সাথে মিল নাও পেতে পারেন। তাই অনুগ্রহ করে আপনি ভ্রমণে
যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে পরিকল্পনা
সাজাবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট,
যানবাহনের জন্য যোগাযোগের নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক
লেনদেনের আগে ভালো ভাবে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন প্রকার আর্থিক
ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে ট্র্যাভেল বাংলাদেশ দায়ী থাকবে না
Vlog Tag:
nijhum dwip,nijhum dip,nijhum dwip noakhali,nijhum dwip tour guide,nijhum dwip hotels,nijhum dwip bangladesh,hatiya noakhali,nijhum dwip resort,nijhum dwip sea beach,nijhum dwip beach,nijhum dwip hatia,নিঝুম দ্বীপের পথে,নিঝুম দ্বীপ,নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ,নিঝুম দ্বীপ নোয়াখালী,হাতিয়া,নিঝুম দ্বীপ হাতিয়া,নিঝুম দ্বীপ ভ্রমন খরচ
0 Comments