Random Posts

নাফাখুম ভ্রমন গাইড | Nafakhum Travel Guide

 নাফাখুম ভ্রমন গাইড

debota pahar,paddo jiri,chimbuk hill,nilachol,nilgiri,saatbhaikhum,bhelakhum,bandarban vlog,remakri,raja pathor,bandarban,thanchi,nafakhum,amiakhum,tindu,বান্দরবান,থানচি,পদ্ম ঝিরি,আমিয়াখুম,নাফাখুম,রেমাক্রি,বড় পাথর,জিনাপাড়া,দেবতা পাহাড়,আমিয়াখুম জলপ্রপাত,সাতভাইখুম,ভেলাখুম,শৈলপ্রপাত,চিম্বুক,মিলনছড়ি,নীলগিরি,নীলাচল,থুইসা পাড়া,নাফাখুম জলপ্রপাত,নাইক্ষংমুখ,তিন্দু
ছবিঃ নাফাখুম (Nafakhum)

নাফাখুম বান্দরবন জেলার থানচি উপজেলার একটি মারমা অধ্যুসিত এলাকা । মারমা ভাষায় খুম শব্দের অর্থ হচ্ছে ঝর্না । রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ পাথুরে পথে নামতে গিয়ে চমকার এই জলপ্রপাতের সৃটি হয়েছে । এখানে নাফানামের এক প্রকার মাছপাওয়া যায়এরা স্রোতের বিপরীতে লাফ দিয়ে ঝর্না পার হতে চেষ্টাকরে, এখানকার স্থানীয় উপজাতীয়রা সহজেই সে মাছগুলোকে জালদিয়ে ধরে । সম্ভবত সেকারনেই এই ঝর্নার নামনাফাখুম । সবুজপাহাড়ী বন আর পাথুরে ভুমির মাঝে নাফাখুম এই অঞ্চলটি অসাধারন স্বপ্নময় সুন্দর স্থান। বান্দরবান জেলার এই স্পট গুলো বর্তমানে পর্যটকদের কাছে কাঙ্খিত গন্তব্য পরিণত হচ্ছে। 

নাফাখুম ভ্রমণের প্রস্তুতিঃ

১) ভালো, মজবুত ব্যকপ্যাক নিবেন। হাতব্যাগ/লাগেজ এসব চলবেনা 

২) পুরো টুরে নিজের ব্যাগ নিজের কাধে রাখতে হবে তাই ব্যাগের ওজন যেন বেশি না হয় এই বিয়ে খেয়াল রাখবেন ।

৩) ট্র্যাকিং স্যান্ডেল নিবেন। মাটিতে ভালো গ্রীপ করে, পিছলে যায় না এমন স্যান্ডেল নিবেন।

৪) সঙ্গে পানি, খেজুর সামান্য কিছু হাল্কা খাবার রাখবেন।

৫) পাহাড়ে উঠলে পায়ের পেশির উপর অনেক চাপ পরে, তাই শক্তির জন্ পাহাড়ি কলা কিনে খেতে পারেন । 

৬) সারাদিন চলার পথে ঘাম ঝরলে বেশি স্যালাইন খাবেন। 

৭) হাটার সময় আংলেট, নী-ক্যাপ পরবেন এতে হাটতে সুবিধা হবে 

 ৮) টর্চ নিবেন। কম কম করে জ্বালাবেন। চার্জ শেষ হলে চার্জ দেয়ার ঝামেলা পোহাতে হবে। 

৯) অবশ্যই, অবশ্যই প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবেন। যত দেরিতে রওনা হবেন, রোদে হাটতে তত বেশি কষ্ট হবে। 

১০) জোঁকের জন্য সবার সঙ্গে লবন রাখবেন। জোঁক লাগলেই অযথা চেঁচা মেচি না করে  লবন দিয়ে দিবেন জোঁক মরে যাবে। 

১১) রোদের জন্য ক্যাপ/ছাতা নিতে পারেন। 

১২) জ্বর এর ঔষধ, পেইন কিলার,আমাশা এর ঔষধ, গ্যাস্ট্রিক এর ঔষধ, এর ঔষধ খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট ইত্যাদি সাথে নিবেন।

১৩) ৩ কপি ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটো কপি ন্যাশনাল আইডি কার্ড না থাকলে যেকোনো ছবি যুক্ত আইডি কার্ডের ফটো কপি নিতে ভুলবেন না যদি নিতে ভুলে যান তবে না ঘুরেই আপনাকে ফিরে আসতে হবে ।

১৪)  বড় গ্রুপ করে যাওয়ার চেষ্টা করবেন তা না হলে খরচ বেড়ে যাবে । 

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে বান্দরবান  এসি এবং নন এসি অনেক বাস আছে এর মধ্য পাবেন শ্যামলী পরিবহন এবং হানিফ পরিবহন এ। এছাড়াও সেন্টমারটিন  সার্ভিস,ডলফিন,শান্তি,ইউনিক,এস আলম সহ আরো কিছু বাস সার্ভিস আছে। এসি সার্ভিসের মধ্যে শ্যমলী আর সেন্টমারটিন পরিবহন বাকী সব নন এসি বাস।  ভাড়া নন এসি - ৬২০ টাকা , আর এসি ৯৫০-১৪০০ টাকা নিবে। ঢাকা থেকে সকাল ৮ টা এবং  রাত ১০:৩০-১১:৩০ এ বিভিন্ন সার্ভিসের বাস বান্দরবনের উদ্দেশ্যেছেড়ে যায় এবং সকাল ৫ টা - ৭:০০ এর মধ্যে বান্দরবান পৌছে যায়। 

বান্দরবান টু থানচী:

লোকাল বাসে থানচি যেতে চাইলে , বান্দরবান বাস স্ট্যান্ড থাকে থানচি বাজার বাস স্ট্যান্ড যাবেন , অটোতে করে জন প্রতি ২০ টাকা নিবে। বান্দরবানের থানচী বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাসে থানচী বাজার যেতে ভাড়া নিবে জনপ্রতি ২০০ টাকা। সবচেয়ে আরামদায়ক পন্থা হচ্ছে  বান্দরবান শহর থেকে থানচী রিসার্ভ চান্দের গাড়ি নিয়ে যাওয়া , চাঁদের গাড়ী রিজার্ভ ভাড়া নিবে ৪৫০০-৬০০০ টাকা। অথবা সিএনজি রিজার্ভ করেও জেতে পারেন, বান্দরবান টু থানচী সিএনজি রিজার্ভ ভাড়া ৩০০০ টাকা পড়বে ।

থানচি বাজারে এসে যেভাবে নাফাখুম ভ্রমণের প্রস্তুতি নিবেনঃ

থানচী বাজারের এর গাইড সমিতি থেকে এবার আপনাকে গাইড ঠিক করতে হবে এবং সাথে রিসার্ভ ট্রলার নিতে হবে। থানচি হতে রেমাক্রি পর্যন্ত  ১ জন গাইড লাগে  এবং রেমাক্রি হতে নাফাখুম পর্যন্ত আরেকজন গাইড নিতে হবে ।  থানচী থেকে গাইড প্যাকেজ আকারে নিতে হয় রেমাক্রি হয়ে নাফাখুম পর্যন্ত যাওয়া এবং পরের দিন আবার থানচিতে ফিরে আসা পর্যন্ত ১৫০০-২০০০ টাকা নিবে ।  ট্যুর চলা কালীন সময়ে গাইডের থাকা খাওয়ার সকল খরচ পর্যটকদের বহন করতে হয় । যেদিন যাবেন সেদিন ও পরে নিয়ে আসা পর্যন্ত এই চুক্তি। এক বোটে ৫ জনের বেশি যেতে পারবেন না  । সাঙ্গু নদীতে যদি পানি বেশি থাকে তবে রেমাক্রি থেকে নাফাখুমের দিকে অর্ধেক রাস্তা ট্রলার রিজার্ভ করে যাওয়া যায় ভাড়া নেয় ১০০০ টাকা । থানচি বাজারে গাইড সমিতির কাছ থেকে বাধ্যতা মূলক লাইফ জ্যাকেট ভাড়া নিতে হয় , ভাড়া প্রতি দিনের জন্য ৫০ টাকা করে ।

গাইড,নৌকা এবং লাইফ জ্যাকেট ভাড়া নেওয়ার পরে করনীয়ঃ

গাইড ঠিক করা হয়ে গেলে পর্যটন কর্পোরেশনের ১ টা ফর্মে সকলের নাম এন্ট্রি করতে হয় এবং ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটো কপি জমা দিতে হয় । এই ফর্ম আপনার গাইড বিজিপির কাছে জামা দিবেন । তার পর লোকাল থানায় গিয়ে থানার বইয়ে সকলের নাম এন্ট্রি করতে হয় । এবং পর্যটকদের বাসার নাম্বার দিয়ে হয় যেন কোন ঝামেলা হলে আপনার অভিবাবকের সাথে যোগাযোগ করতে পারে । নিরাপত্তার স্বার্থে থানার ডিউটি অফিসার পর্যটকদের গ্রুপ ছবি তুলে রাখে ।   

থানচি থেকে রেমাক্রি হয়ে নাফাখুমঃ

সব কিছু ঠিক ঠাক আবার ইঞ্জিন চালিত নৌকায় উঠে বসুন নৌকা আপনাকে রেমাক্রি নামিয়ে দিবে । থানচি থেকে রেমাক্রি যেতে ২-২.৫ ঘন্টা সময় লাগে । বিকাল ৩ টার পরে থানচি থেকে রেমাক্রি যাওয়ার অনুমুতি দেয়া হয় না । রেমাক্রি পৌঁছানোর পরে সাধারণত সবাই ১ ম রাত রেমাক্রিতেই অবস্তান করে । পরের দিন সকাল ভোরে নাফাখুমের উদ্দেশ্য রাওনা দেয় । রেমাক্রি থেকে নাফাখুম যেতে  ৫০০ টাকা দিয়ে আলাদা গাইড নিতে হয় । যদি আপনারা থানচি থেকে তাড়াতাড়ি রাওনা দিতে পারেন তবে ১ম দিন রেমাক্রিতে না থেকে নাফাখুম গিয়ে নাফাখুম পাড়ায়ও থাকতে পারেন । রেমাক্রি থেকে হাটা শুরু করার সময় গাইডকে বলবেন বাঁশের বন্দোবস্ত করে দিতে , বাঁশ হাতে পেলে হাঁটতে সুবিধা হবে । রেমাক্রি থেকে প্রায় ২-৩ ঘন্টা ঝিরি পথ আর পাহাড় পায়ে হেটে পাড়ি দিলেই পেয়ে যাবেন নাফাখুম পাড়া । পুরোটাই ঝিরি পথ কোথাও পাথুরে আবার কোথাও মাটির  কাদা কোথাও কোমর সমান পানি। দু তিন জায়গায় হয়ত হাটু অথবা কোমড় পানি পাড়ি দিতে হবে । 

রেমাক্রি/নাফাখুম পাড়াতে যা যা খাবেনঃ

 এখানে মুলত ৩ ধরনের খাবারের ব্যবস্তা রয়েছে প্যাকেজ ১ঃ ডাল,ডিম,ভর্তা,ভাত- মূল্য ১৫০ টাকা, প্যাকেজ ২ঃ ডিম খিছুড়ি - মূল্য ১৫০ টাকা , প্যাকেজ ৩ঃ ডাল,ফার্মের মুরগি,ভর্তা,ভাত- মূল্য ২০০ টাকা ,প্যাকেজ ৪ঃ ডাল,পাহাড়ি মুরগি,ভর্তা,ভাত- মূল্য ২৫০ টাকা । আর এখানকার সব পাড়াতেই রাতে থাকলে ২০০ টাকা ভাড়া দিতে হয় ।

নাফাখুম ঝর্ণা থেকে রেমাক্রি জলপ্রপাথ - থানচি হয়ে ঢাকাঃ

নাফাখুম ঝর্ণা থেকে রেমাক্রি যেতে মোটামুটি  ২-২.৫ ঘন্টা সময় লাগে , যদি ৮-৯ টায় রাওনা দেন তবে রেমাক্রিতে জেতে প্রায় ১১ - ১১.৩০ বেজে যাবে । রেমাক্রিতে কিছুটা সময় কাটিয়ে থানচির উদ্দেশ্য রাওনা দিবেন । রেমাক্রিতে থেকে  থানচি পর্যন্ত যেতে মোটামুটি দুপুর হয়ে যাবে ।  থানচিতে দুপুরের খাবার খেয়ে চাঁদের গাড়ী রিজার্ভ করে বান্দরবান চলে আসবেন এবং রাতের বাস ধরবেন ঢাকা ফেরার উদ্দেশ্য ।

গাইড এর নাম্বার- 

১. 01849556340- মোঃ হারুন রশীদ

২. 01826-545024- সুজিত


ভ্রমনে গেলে যে বিষয় গুলো মেনে চলবেনঃ

১) স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করবেন, অনেক সম্মান এবং সুবিধা পাবেন।

২) প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানোর সময় অনুগ্রহ পূর্বক পলিথিন জাতিয় আবর্জনা ফেলে প্রকৃতির ক্ষতি করবেন না। 

৩) পার্বত্য অঞ্চলের সব জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নাই। থানচি পর্যন্ত টেলিটকের আর রবির নেটওয়ার্ক পাবেন। তিন্দুতে বাঁশের এ্যন্টেনা লাগানো সেট থেকে যোগাযোগ করতে পারবেন। কিন্তু রেমাক্রি পৌঁছালে আপনি একেবারেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন এবং বাকি ২ দিন নেটওয়ার্কের বাহিরে থাকতে হবে ।


বান্দরবান,থানচি,পদ্ম ঝিরি হয়ে আমিয়াখুম,ভেলাখুম,সাতভাই খুম ,নাইক্ষংমুখ এবং নাফাখুম ৩ দিনে ঘুরার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের বানানো এই ভিডিওটি দেখতে পারেনঃ




Vlog Tag:
debota pahar,paddo jiri,chimbuk hill,nilachol,nilgiri,saatbhaikhum,bhelakhum,bandarban vlog,remakri,raja pathor,bandarban,thanchi,nafakhum,amiakhum,tindu,বান্দরবান,থানচি,পদ্ম ঝিরি,আমিয়াখুম,নাফাখুম,রেমাক্রি,বড় পাথর,জিনাপাড়া,দেবতা পাহাড়,আমিয়াখুম জলপ্রপাত,সাতভাইখুম,ভেলাখুম,শৈলপ্রপাত,চিম্বুক,মিলনছড়ি,নীলগিরি,নীলাচল,থুইসা পাড়া,নাফাখুম জলপ্রপাত,নাইক্ষংমুখ,তিন্দু

Post a Comment

0 Comments