বগালেক ভ্রমণ গাইড

ছবিঃ বগালেক

বগালেক বান্দরবানের গহীনে লুকিয়ে থাকা দারুণ সৌন্দর্যের এক আধার । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩০০ ফুট ওপরে পাহাড়ের চূড়ায় ১৫ একর জায়গার এ রকম লেক আর কোথায় মিলবে না। পাহাড়ের ওপর একটা ছবির মতো গ্রাম, তার পাশেই বগালেক।এই লেকটি তৈরি হয়েছিল একটি মৃত আগ্নেয়গিরি পানি চুয়ে চুয়ে। তাই একে ড্রাগন লেকও বলা হয়।বিশালাকৃতির এই লেক দেখে আপনার এই বিশাল ভ্রমণ স্বার্থক মনে হবে। বগালেক দেখার পাশাপাশি আপনি চাইলে কেওক্রাডং চূড়াও জয় করে আসতে পারবেন অনায়াসে ইনশা আল্লাহ। বগালেক থেকে মাত্র ৩ ঘণ্টা হাঁটলেই আপনি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে যাবেন।
বগালেক ভ্রমনের উপযুক্ত সময়ঃ
বর্ষা এবং শীতে , কস্ট কম করতে চাইলে শীতে যেতে পারেন , তবে বেস্ট ভিও দেখতে চাইলে বর্ষাই বেস্ট ।
ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার উপায়ঃ
ঢাকা থেকে বান্দরবান শহরে যাওয়ার জন্য শ্যামলী, ইউনিক, ঈগল, হানিফ, ডলফিন, এস.আলম, সৌদিয়া সহ বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিস রয়েছে এই সব বাসের নন এসি সার্ভিসের ভাড়া ৬২০-৬৫০ টাকা, এসি ৯৫০-১৪০০ টাকা । বান্দরবান যেতে সময় লাগবে প্রায় ৮-১০ ঘন্টা । আর যদি ট্রেনে যেতে ইচ্ছুক হন তবে চট্রগ্রাম হয়ে তারপর আবার বাসে করে বান্দরবন যাবেন।
চট্টগ্রামের থেকে বান্দরবান যাওয়ার উপায়ঃ
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাসটার্মিনাল থেকে পূরবী ও পূর্বাণী নামে দু’ টি বাস যায় বান্দরবানে যায় , ভাড়া নেয় প্রায় ১১০ টাকা সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টা।
বান্দরবান হতে রুমা যাওয়ার উপায়ঃ
লোকাল গাড়ীতে রুমা যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে বান্দরবান শহর থেকে হাফেজ ঘোনা বাস স্ট্যান্ডে যেতে হবে । ব্যাটারি চালিত টমটমে চড়ে হাফেজ ঘোনা যেতে ভাড়া নিবে জন প্রতি ২০ টাকা । সময় লাগবে প্রায় ২০ মিনিট । হাফেজ ঘোনা বাস স্ট্যান্ড থেকে সকাল ৭ঃ৩০ মিনিটে লোকাল বাসের ১ম ট্রিপ ছেড়ে যায় । এর পর প্রতি ঘন্টায় ১ টি করে বাস যায় রুমা বাজারের উদ্দেশ্য । বান্দরবান শহর থেকে লোকাল বাসে রুমা বাজার যেতে প্রায় ৪ ঘন্টা সময় লাগে , ভাড়া নেয় জন প্রতি ১২০ টাকা। এ ছাড়া চাঁদের গাড়িতেও বান্দরবান থেকে রুমা যাওয়া যায়। চাঁদের গাড়ীর রিজার্ভ ভাড়া নিবে প্রায় ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা । সেই ক্ষেত্রে সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘন্টা । আপনারা চাইলে বান্দরবান হতে সরাসরি বগালেক যাওয়ার জন্য চাঁদের গড়ি রিজার্ভ নিতে পারেন । বান্দরবান থেকে বগালেক পর্যন্ত চাঁদের গাড়ির রিজার্ভ ভাড়া প্রায় ৫০০০-৬০০০ টাকা(শুধু যাওয়া)। বান্দরবান হতে সরাসরি বগালেক যাওয়া এবং আসা মিলিয়ে চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ নিতে পারবেন ৮৫০০ থেকে ১২০০০ টাকার মধ্য তবে দামাদামি করে নিতে হবে । ১ চাঁদের গাড়ীতে ১২ থেকে ১৩ জন বসতে পারবেন ।
রুমা বাজার থেকে বগালেক যাওয়ার উপায়ঃ
রুমা বাজার থেকে বগালেকের দূরত্ব ১৭ কিঃমিঃ , রুমা বাজার থেকে চাঁদের গাড়িতে (রিজার্ভ) বগালেক যেতে পারেন রিজার্ভ ভাড়া নিবে ২২০০ টাকা (শুধু যাওয়া) । ১ চাঁদের গাড়ীতে ১২ থেকে ১৩ জন বসা যায় । রুমা বাজার থেকে চাঁদের গাড়িতে বগালেক যেতে সময় লাগবে প্রায় ১.৫ ঘন্টা। এছাড়া রুমা বাজারে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত লোকাল চাঁদের গাড়ি পাওয়া যায় বগালেক যাওয়ার জন্য , ভাড়া নেয় জন প্রতি ১০০ টাকা । বিকাল ৪ টার পরে রুমা থেকে বগালেক যাওয়ার অনুমুতি দেয়া হয় না ।
চাঁদের গাড়ীর নাম্বার সমুহঃ জীপ চালক পলাশ -01820400446 , জীপ চালক আবু তৈয়ব – 01836248241,01839558613, জীপ চালক নাসির - 01830316879
![]() |
ছবিঃ বগালেক পাড়া |
গাইডের বিষয়ে তথ্যঃ
রুমা বাজারে পৌঁছে গাইড নিতে হবে। ১ জন গাইড ১৫ জন টুরিস্ট নিতে পারেন। আপনারা চাইলে আগে থেকে গাইড কনফার্ম করে যেতে পারেন । সেই ক্ষেত্রে আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে আমরা কয়েক জন গাইডের নাম্বার দিয়েছি । গাইডসহ রুমা বাজারের আর্মি চেক-পোস্টে চেক-ইন করে আবারো নাম এন্ট্রি করে পরবর্তী গন্তব্য বগালেকে যেতে হবে। বগালেকে রাতে বারবি কিউ করতে চাইলে গাইডকে দিয়ে রুমা বাজার থেকে মুরগি এবং সকল উপকরণ কিনে নিবেন ।
গাইড ফিঃ ৩ দিন ২৬০০ টাকা । গাইডের থাকা এবং খাওয়া খরচ বহন করতে হবে ট্যুরিস্টদের ।
গাইড শিপু দাদাঃ 01856729355
গাইড প্রকাশ দাদা - 01887659360
যেসব যায়গায় অনুমতি নিতে হবে:
বগালেক যেতে হলে আপনাকে
অনুমতি নিতে হবে ৩ জায়গা থেকে
১. রুমাবাজার গিয়েই সেনাবাহিনীর
কাছ থেকে ফরম পূরন করে অনুমতি নিতে হবে
২. রুমা থানা থেকে
অনুমতি নিতে হবে ।
৩. বগালেকে ডুকার সময়
সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে ।
৬. ফেরার পথে আবার সব যায়গায় এন্ট্রি করে ফিরতে হবে ।
এখানে ১টা
কথা বলা
বাঞ্ছনীয় রুমা বাজারে এসে যে ফর্মে এন্ট্রি করবেন তার মূল্য ১০০ টাকা , ১
ফর্মে ১০ জনের নাম এন্ট্রি করা য়ায় । ১০ জনের চেয়ে বেশি লোক হলে
এক্সট্রা আরো ১ টি ফর্ম কিনতে হবে ।
বগালেকে এসেই আর্মি ক্যাম্পে নাম এন্ট্রি করতে হয়। আর্মি ক্যম্প থেকে সবাইকে এক সঙ্গে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সবার নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু নির্দেশনা দেয়া হবে। সিদ্ধান্তগুলো হলো, রাত ১০ টার পর কটেজের বাইরে থাকা যাবে না। অপরটি, লেকের পানিতে সাঁতরানো যাবে না ইত্যাদি।
লেকে নামার একটিই স্থান রয়েছে সেখানে গোসল করার জন্য পাকা সিঁড়ি রয়েছে। বগালেকের গভীরতা ১১৫ ফুট। সিঁড়ি কাছ থেকে কয়েক কদম যাওয়ার অনুমতি রয়েছে এখন। আগে সাঁতরানোর অনুমতি ছিল, কিন্তু লেকের পানিতে ডুবে পর্যটক মারা যাওয়ার ঘটনায় বর্তমানে সাঁতরানোর অনুমতি নেই।
বগালেকে যেখানে থাকবেনঃ
বগালেক থাকার কটেজ ঠিক করে দেবেন গাইড । যদি আপনারা নিজে বগালেক এবং কেওক্রাডং এ থাকার কটেজ কনফার্ম করতে চান তবে আমাদের দেয়া কটেজের নাম্বার সমুহে যোগাযোগ করে বুকিং দিতে পারেন তবে অবশ্যই আমাদের ভিডিও দেখে ১০০% নাম্বার কনফার্ম হয়ে তারপর লেনদেন করবেন । বগালেকের কটেজ গুলোতে থাকতে জন প্রতি দিতে হয় ২০০ টাকা করে । চেষ্টা করবেন লেক পাড়ের কটেজ গুলোতে থাকতে । বগালেকের সবচেয়ে সেরা কটেজ জিংমুন লিয়ান বমের লেক পাড়ের রিসোর্ট কারন এই রিসোর্ট বগালেকের ঘাটের কাছে , এছাড়া রবার্ট দাদার ১ টি কটেজ রয়েছে লেক পাড়ে । আর বগালেকে আরেকটি সুন্দর কটেজ হচ্ছে বগালেক আর্মি কটেজ । এছাড়া সিয়াম দিদির বেশ কয়েকটি লেক পাড়ের কটেজ রয়েছে ।
আর্মি কটেজঃ 01769291546, লাল জিক বম রিসোর্টঃ 01834709211,01839584064,01706625449 সিয়াম রিসোর্টঃ 01789428227, 01532716987, 01840721590 জিং মুন লিয়ান বম রিসোর্টঃ 01762156796,01828498730 রবার্ট কটেজঃ 01840013495
বগালেকের খাবারঃ
বগালেকে টাকা খরচ করলেও শহরের ভালো রেস্তরা গুলোর মত খাবার পাবেন না । তবে এখানে পাহাড়ি মুরগি, ডাল, আলু ভর্তা আর কচি বাঁশের সবজি দিয়ে পেট ভর্তি খেতে পারবেন। এখানকার খাবারে অসাধারণ স্বাদ! পাহাড়িদের তরকারিতে ব্যবহার করা হয় কাঁচা হলুদ, পাহাড়ি মরিচসহ পাহাড়ি সব কিছু। এই খাবারে কোনো ভেজাল নেই । পাহাড়িরা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য দিয়ে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে , তাই পাহাড়ী খাবার তৃপ্তি করে খেতে পারবেন। বগালেকে খাবারের জন্য সিয়াম দিদির খাবার হোটেল বেস্ট , সিয়াম দিদির হোটেলে খেতে চাইলে আগে থেকে ফোন করে খাবারের অর্ডার করে রাখতে হয় । সিয়াম দিদির মোবাইল নাম্বার - 01789428227, 01532716987, 01840721590
বগালেকে খাবারের মুল্য তালিকাঃ
ভাত ,ডাল,ডিম,সবজি = ১৫০ টাকা
ভাত ,ডাল,পাহাড়ি মুরগি,সবজি=২২০ টাকা
ভাত ,ডাল,সোনালী মুরগি/লাল মুরগি,সবজি=২০০ টাকা
ভাত ,ডাল,ব্রয়লার মুরগি,সবজি=১৮০ টাকা
সকালের নাস্তা - খিছুড়ি ,ডিম ভাজি,ভর্তা,বেগুন ভাজি =১২০ টাকা
ট্র্যাভেল বাংলাদেশ টিম সব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগত ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানান অথবা আমাদের মেইল করুন chsaiful@gmail.com। আমরা ঠিক করে নিবো । দৃষ্টি আকর্ষণ : আমাদের পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলো আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলে কোথাও ময়লা ফেলবেন না । দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের। |
Vlog Tag: #Boga_Lake #keokradong #Ruma_Bandarban,কেওক্রাডং ট্রেকিং,keokradong,কেওক্রাডং,বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পাহাড় চূড়া,bandarban,ruma,বগালেক টু কেওক্রাডং ট্রেকিং,বান্দরবান,কেওক্রাডং অভিযান,মেঘে ঢাকা কেওক্রাডং,বগালেক,চিংড়ি ঝর্ণা,দার্জিলিং পাড়া,কেওক্রাডং ভ্রমণ,রুমা,bandarban vlog,highest hill of bangladesh,লালাবম,Lalabom,Travel Bangladesh,darjeeling para,বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম,bogalake to keokradong,boga lake,chingri waterfall
0 Comments