কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশেরদক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের অপরূপ সুন্দরএকটিসমুদ্রসৈকতপ্রায়১৮কিঃলোঃদৈর্ঘ্যেরকুয়াকাটাবাংলাদেশেরসেরাসমুদ্রসৈকত গুলোর একটি । কুয়াকাটা হচ্ছে দক্ষিণএশিয়ারএকমাত্রসমুদ্রসৈকতযেখানেসূর্যোদয়এবংসূর্যাস্তদুটোইদেখাযায়।
ঢাকা সদরঘাট থেকে
সন্ধ্যার পর বরিশালের উদ্দেশ্যে একাধিক লঞ্চ ছাড়ে এবং সকালে বরিশাল পৌঁছায়। লঞ্চের
ডেকে জনপ্রতি ভাড়া ১৫০-২০০ টাকা । সিঙ্গেল ও ডাবল কেবিন শ্রেনী ভেদে ৮০০ থেকে ৩,৫০০ টাকার মধ্য কেবিন
পাবেন। বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে রূপাতলি বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে কুয়াকাটার বাসে উঠতে হয়। ভাড়া নেয় প্রায় ১৮০-২৫০ টাকা । সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টার মত ।
কুয়াকাটায় পর্যটকদের থাকার
জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল পাবেন । মোটামুটি মানে থাকার জন্যে ৩০০-১০০০ টাকায়
হোটেল পাবেন । মান ও শ্রেনী অনুযায়ী ভালো মানের হোটেলে পাবেন ২০০০-৫০০০ টাকায় । সিজন
ও সরকারি ছুটির দিন বাদ দিয়ে গেলে আগে থেকে হোটেল বুক করার প্রয়োজন হয় না , কুয়াকাটা গিয়ে দেখে শুনে আর দামাদামি করে হোটেল নিতে পারবেন । হোটেল তাজোয়ার
প্যালেস, খাসপুকুর সংলগ্ন,কুয়াকাটা। ম্যানেজার-০১৭৫৭৬৮৩০৩৭,বীচ থেকে একটু দূরে হলেও বীচে আসা যাওয়ার জন্যে ভ্যান দেয়। নতুন হয়েছে, পরিবেশ ভালো এবং নিরিবিলি। বড় রুম (২ জনের বেড)- প্রতিরুম ৬০০ টাকা ( ভ্যান ভাড়া সহ)
ভাড়া
সহ বনানী ডিলাক্স: ৫০০০ টাকা (এসিটুইন) এবং কাপল: ৩৫০০ টাকা(এসি টুইন) এবং কাপল: ১৮৫০ টাকা
ফোন: +880442856042 মোবা:01713674192
প্রতি বাইক ৭০০ টাকা (দামাদামি
করে ৫০০ এর মধ্যে নিতে পারবেন)। আলম ভাই ০১৭২১৭৯১৪২৩ শাহজালাল ভাই ০১৭৮২৮২৭৭৩৭
খাবার খরচঃ
কুয়াকাটায় হোটেলগুলো নিজস্ব রেস্টুরেন্টে তাদের অতিথিদের খাবারের জন্য
ব্যবস্থা করে। এছাড়া এখানকার স্থানীয় রেস্টুরেন্টেও বিভিন্ন রকম দেশী খাবার পাওয়া যায়
। বার-বি-কিউ, যেকোনো ধরণের মাছ
ফ্রাই খাবার জন্য বীচের পাশেই দোকান আছে। টুনা মাছের বার-বি-কিউ ৩ কেজি ৭৫০ টাকা লইট্যা
মাছপার
পিছ ৩৫ টাকা কাঁকড়া ( পার পিছ বড় ১০০-১৫০ , ছোট ৫০)
আমাদের
কুয়াকাটা ভ্রমনের বিস্তারিতঃ
আমরা
সদরঘাট লঞ্চটার্মিনাল
থেকেটিকেট কেটে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে
রওনা দিয়েছিলাম। লঞ্চ ছেড়েছে ৬.৩০ । সারা রাত আমরা লঞ্চের ডেকেবসে সময় কাটিয়েছি।
আকাশ ভরা পূর্ণিমারআলো , পানির
কল কল শব্দ , বাতাস
সবকিছু আমাদের মুগ্ধতায় ভরিয়ে রেখেছে।
পরের দিনভোর ৫.০০ টায় আমরা পটুয়াখালী
পৌছাই।সেখানথেকে বাস টার্মিনাল যেতে হয় অটোতে করে এবং বাস
টার্মিনালে যেতেসময় লাগে প্রায় ২০/২৫ মিনিট ।১ম
বাস ছাড়ে ৬.৩০মিনিটে। বাস ষ্টেশনে গিয়ে
টিকেট কেটে সকালের নাস্তাসেরে নেই। তাড়াতাড়ি নাস্তা
সেরে বাসে উঠে পড়ি । আমরাকুয়াকাটা পৌছাই সকাল ১০.৩০
মিনিটে । তারপর আমরা হোটেলে চেক ইন করি। আমরা থেকেছি হোটেল তাজোয়ার প্যালেস এ । হোটেলে
চেক ইন করেই আমরা চলে যাই কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টে কারণ দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে আমাদের সবার
ইচ্ছা করছিলো সমুদ্রে জলকেলি করতেআর গোসল করার জন্য
সব পর্যটক কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টকে বেঁচে নেয় । মোটামুটি ২ ঘন্টা সমুদ্রে অতিবাহিত
করি । তার পর আমরা ফিরে আসি আমাদের হোটেলে ।সমুদ্রে ঝাপাঝাপি
করে আমরা সবাই ছিলাম ক্ষুধার্ত তাই আমরাবের হয়ে পড়ি
লাঞ্চ করার জন্য ।
কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশেঅনেক
খাবার হোটেল রয়েছে । এইসব হোটেলে সকালের নাস্তা, দুপুর এবং রাতের
খাবার পাওয়া যায়। দুপুরে সাদা ভাত, বিভিন্ন রকম ভর্তা, পোয়া
মাছ, ডাল,
সবজি
এবং মুরগির মাংস,খেয়েছিলাম, প্যাকেজ নিয়েছিলো ১৬০ টাকা জন প্রতি । তবে খাবার
আগে অবশ্যই দরদাম করে নেবেন। এছাড়া আপনারা চাইলে পছন্দমতো মাছ ভেজে নিয়েও খেতে পারবেন
। এইসব হোটেলে মাছগুলো প্রসেস করাই থাকে। পছন্দ মত দরদাম করে অর্ডার করলেই ভেঁজে
দেয় ।
দুপুর ২ টার মধ্য লাঞ্চ সেরে আমরা দেখতে যাই ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী নৌকা,
কুয়াকাটা
বৌদ্ধ মন্দির, তার পাশেই আছে কুয়াকাটার কুয়া যার নামে কুয়াকাটা নামকরণ করা হয়েছে।
তারপর বিকাল ২.৩০ মিনিটে বাইক রিজার্ভ করে বের হই পশ্চিমের ৬
টি স্পট দেখতে। শুঁটকি পল্লী, ঝিনুক বীচ, লেবুর বন,
দেখে
তিন নদীর মোহনায় এসে আমরা সূর্যাস্ত দেখি এবং দূর থেকে সুন্দরবনের পূর্বাংশ
- ফাতরার
চরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য অবলোকন করি । তারপর জিরো পয়েন্টে এসে বাইক ভাইয়াদের বিদায়
দিয়ে টুনা মাছ, কাঁকড়া ফ্রাই অর্ডার করে আমরা চলে যাই বীচ মার্কেটে সেখানে বারমিজ
আঁচার , চকলেট এবং শুঁটকী কেনাকাটা করি ।কেনাকাটা শেষ করে
সবাই মিলে টুনা মাছের বার-বি-কিউখেলাম
সবাই। টেস্ট ছিলো অসাধারন। ট্যুরের পূর্ণতা দিয়েছিলো এটি। তার পর সবকিছু হোটেলে রেখেওইদিন
রাতে সাগরের উত্তাল ঢেউ আর জোৎনা বিলাস করে সময় কাটাই রাত ১১ টা পর্যন্ত। ফেরার
পথে পরের দিনের জন্য বাইক ঠিক করলাম। এরপর চলে আসলাম হোটেলে এভাবে আমাদের ১ম দিনের
কর্ম ব্যস্ত দিন শেষ করি ।
পরেরদিন
ভোর ৫ টায় বাইকের ভাইয়ারা এসে কল দিয়েছিল।আমাদের সাথে তাদের চুক্তি
ছিলো পূর্ব দিকের ১২ টি স্পট দেখাবে । আমরা প্রথমেই চলে যাই গঙ্গামতির চরে এই স্পটে
খুব ভালো ভাবে সূর্যদয় দেখা যায় । সূর্যদয়দেখা শেষ করে অন্য সব স্পট
দেখার জন্য বাইকে চড়ে বসি , বীচের উপর দিয়ে বাইকে চড়া বেশ উপভোগ্য ছিলো। এক পাশে
সমুদ্র সৈকত, অন্য পাশে বীচ আর গাছপালা দেখতে দেখতে আমরা পৌঁছে যাই কুয়াকাটার জাতীয় উদ্যান, কাউয়ার চর, তারপর গঙ্গামতীর লেক এরপর ঝাউবন, লাল কাঁকড়ার চর, রূপালী দ্বীপ ইত্যাদি স্পট দেখে সকালের নাস্তা সেরে নেই । তার পর রাখাইন পল্লীর উদ্দেশ্যে রাওনা দেই । রাখাইন পল্লীতে গিয়ে ওইখানের আদিবাসীদের
পুলি পিঠা খেতে ভুলবেন না প্রতি পিস পিঠা ১০ টাকা। রাখাইন পল্লিতে বৌদ্ধ বিহার, মিষ্টি পানির কূয়া এবং রাখাইন পল্লীতে ঘুরে ১২.০০ টার দিকে চলে আসি হোটেলে।
হোটেলে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে জিরো পয়েন্ট বীচে গিয়েছিলাম গোসল সারতে , গোসল সেরে দুপুরে লাঞ্চ করে হোটেলে ফিরে আসি এবং লম্বা ঘুম দেই। বিকালে ঘুম থেকে উঠে আবারো কিছু কেনা কাটা করি এবং জিরো পয়েন্টে স্পিড বোডে ঘুরে বেড়াই এবং সূর্যাস্ত উপভোগ করি ।
এবং পরের দিন সকালে ট্রলার যোগে ফাররার চর ,লালকাকড়ার
চর এবং শুঁটকী পল্লি ঘুরার জন্য একটি ট্র্যাভেল এজেন্টের সাথে কথা বলি । তাদের সাথে
চুক্তি হয় তারা ভোর ৬ টায় আমাদের জিরো পয়েন্ট থেকে এই সব স্পটে ঘুরাতে নিয়ে যাবে জন
প্রতি প্যাকেজ ছিলো ৫০০ টাকা করে।
সকালে ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠে আমরা নাস্তা সেরে রেডি হয়ে যাই ফাররার
চরে যাওয়ার জন্য । সকাল ঠিক ৬ টায় আমরা ট্রলারে চেপে রাওনা দিয়েছিলামএবং ঘোরাঘুরি করে দুপুর ১২.০০ টায় ফিরে
এসেছিলাম । হোটেল চেক আউট করেই দুপুরের খাবার সেরে নেই এবং১.০০
এর গাড়িতে রওনা দেই পটুয়াখালীর বাস স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে। পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনাল
পৌছাই বিকাল ৪ঃ২০ টায়। তারপর লঞ্চের কেবিন ঠিক করে নেই লঞ্চ ছাড়ে বিকাল ৫.২০
মিনিটে। সুন্দর একটি ভ্রমনের অফুরন্ত স্মৃতি নিয়ে ঢাকা সদরঘাট পৌছাই ভোর ৬ টায়।
ট্র্যাভেল বাংলাদেশটিমসব সময় চেষ্টা করছে আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে। যদি কোন তথ্যগতভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে মন্তব্যের ঘরে জানানঅথবা আমাদের মেইল করুন chsaiful@gmail.com। আমরা ঠিক করে নিবো ।
দৃষ্টি আকর্ষণ :আমাদেরপর্যটনস্পট গুলো আমাদের দেশের পরিচয় বহন করে এবং এইসব পর্যটন স্পট গুলোআমাদেরদেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমনকিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আর ভ্রমনে গেলেকোথাও ময়লা ফেলবেন না । দেশআমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।
সতর্কতাঃহোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া সহ অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাইট্র্যাভেল বাংলাদেশেপ্রকাশিততথ্য বর্তমান সময়ের সাথে মিল নাও পেতে পারেন। তাই অনুগ্রহ করে আপনি ভ্রমণেযাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে পরিকল্পনাসাজাবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহনের জন্য যোগাযোগের নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিকলেনদেনের আগে ভালো ভাবে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন প্রকার আর্থিকক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যেট্র্যাভেল বাংলাদেশদায়ী থাকবে না।
Vlog Tag:
#কুয়াকাটা,#Kuakata_Sea_Beach,#Kuakata_Travel_Guide,kuakata sea
beach,kuakata trip,kuakata tour,kuakata beach,kuakata,kuakata hotel,places to
visit in kuakata potuakhali,kuakata tourist spot,kuakata tourism,fatrar
char,sea,patuakhali,সাগরকন্যাকুয়াকাটা,কুয়াকাটা,গঙ্গামতির চর,কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত,ফাতরার চর,কুয়াকাটাভ্রমণ,লাল কাকড়ার চর,লেবুর বন,শুঁটকি পল্লী,তিন নদীর মোহনা,বৌদ্ধমন্দির,travel
bangladesh
0 Comments