ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর - ভ্রমণ গাইড
![]() |
ছবিঃ ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর জিরো পয়েন্ট(Volagonj sada pathor) |
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, উৎমাছড়া এবং তুরংছড়া ভ্রমণের বিস্তারিত:
সৌন্দর্যের প্রাচুর্যে ভরা আমাদের সিলেট বিভাগ। ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের কোলঘেঁষা পাথুরে নদী, ঝর্ণা, বন, সবুজে মোড়ানো চা বাগান, নীল জলরাশির নদী এবং হাওর কী নেই সিলেটে..! ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর সিলেটের একটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান। সাদা পাথর, রোপওয়ে, পাথর কোয়ারী, উৎমাছড়া,তুরুংছড়া আর পাহাড়ী মনোলোভা দৃশ্য উপভোগ করার জন্য দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক আর ভ্রমণপ্রিয় মানুষ ভিড় জমায় এখানে। সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদের উৎসমুখে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথরের অবস্থান। দেশ বিভাগের আগে ভারতের আসাম প্রদেশের রাজধানী শিলংয়ের লোকজন এ রাস্তা দিয়েই বাংলাদেশে যাতায়াত করতো। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারীর অবস্থানও এই এলাকায় অবস্তিত। রোপওয়ে , পাথর কোয়ারী , সাদা পাথর আর মেঘালয় পাহাড়ের মনোলোভা দৃশ্য অবলোকনের জন্য এখানে প্রতিদিনই পর্যটকদের আগমন ঘটে । সিলেটের অন্য সব নদীর মত ধলাই নদীও ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে এসেছে । ওপারে উঁচু পাহাড় ঘেরা ভারতের মেঘালয় রাজ্য, আর মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার শীতল পানি ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের উপর দিয়ে তীব্র বেগে বয়ে চলছে , গন্তব্য তৃষ্ণার্ত ধলাই নদীর বুক। ধলাই নদীর উৎসমুখে প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাদা সাদা পাথর,ধলাই নদীর স্বচ্ছ নীল জল আর মেঘালয়ের সবুজ পাহাড় মিলেমিশে যেন একাকার।
সাদা পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা ঝর্ণার পানির তীব্র স্রোত ধলাই নদীর বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাথরের বিছানা শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে হাজার গুণ। পানির উৎস ঝর্ণা হবার কারণে এই পানি বরফ গলার মতো ঠাণ্ডা । বেশিক্ষণ গা ভেজালে শরীরে শীতের কাঁপন ধরে যায়। সাদা সাদা পাথর ছড়ানো এই জায়গাটি দেখতে অবিকল বিছনাকান্দির মতো। এ যেন সাদা পাথরের আরেক বিছনাকান্দি।
ভোলাগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর জায়গা। এখন পর্যন্ত ভোলাগঞ্জে পর্যটকের সংখ্যা কম আসার কারণে জায়গাটা তার সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে পেরেছে এবং এখানে আপনি প্রকৃতির সৌন্দর্য খুব ভালো উপভোগ করতে পারবেন। ভোলাগঞ্জ দেখতে অনেকটা বিছনাকান্দির মতই । সাদা পাথর, স্বচ্ছ পানি,সবুজ পাহাড়ের সারি আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
সিলেট হতে ভোলাগঞ্জ যাওয়ার সময় বোনাস হিসাবে দেখবেন সিলেট আম্বরখানা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে সবুজ চা বাগান। দেখলে মনে হবে যেন সবুজ গালিচা বেচানো চারপাশ।
![]() |
ছবিঃ ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর জিরো পয়েন্ট(Volagonj sada pathor) |
ভোলাগঞ্জ কখন যাবেনঃ
মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর এলাকায় যাওয়ার উপযুক্ত সময়।
ভোলাগঞ্জ এর দর্শনীয় স্থান সমুহঃ
ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়ঃ
পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিবহুল এলাকা ভারতের চেরাপুঞ্জির অবস্থান ভারতের মেঘালয় রাজ্য । ধলাই নদীর উজানে মেঘালয় রাজ্যের অবস্থান। বর্ষাকালে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি পাহাড়ী ঢলের সৃষ্টি করে ধলাই নদীতে নামে । গ্রীষ্মকালে ধলাই নদী মরা নদী হিসাবে পরিচিতি পেলেও বর্ষাকালে এই নদী ফুলে ফেঁপে উঠে। দূরের ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়গুলোর উপর মেঘের ছড়াছড়ি, সাথে ঝর্ণার পানি গড়িয়ে পড়ার দৃশ্য অনেক মনোরম। চিক চিক করা রূপালী বালু এবং ছোট বড় সাদা অসংখ্য পাথর মিলে এ যেন এক সাদা পাথরের রাজ্য। ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়ে মেঘালয়ের পাহাড় দেখার অনুভুতি আজীবন মনে রাখার মত ।
ভোলাগঞ্জ রোপওয়েঃ
প্রতিবছর বর্ষাকালে ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে ধলাই নদীতে নেমে আসে প্রচুর পাথর। তাছাড়া ধলাই নদীর তলদেশেও রয়েছে পাথরের বিশাল মজুদ। এই পাথর দিয়ে পঞ্চাশ বছর কাজ চালানো যাবে সেই হিসাব ধরে ১৯৬৪-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ভোলাগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত সোয়া ১১ মাইল দীর্ঘ রোপওয়ের জন্য নির্মাণ করা হয়। এই প্লান্টের সাহায্যে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাথর উত্তোলন করা হলেও বর্তমানে এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে রোপ ওয়ে টাওয়ার গুলো কালের সৃতিচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে ।
পাথর আরোহণের দৃশ্যঃ
ভোলাগঞ্জে রোপ ওয়ে বন্ধ হলেও থেমে নেই পাথর উত্তোলনের কাজ , ভোলাগঞ্জ কোয়ারীতে শুষ্ক মওসুমে প্রধানত গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করা হয়। এ পদ্ধতিতে শ্রমিকরা প্রথমে কোয়ারীর ওপরের বালি অপসারণ করে। ৭ থেকে ৮ ফুট নিচু গর্ত খোঁড়ার পর কোয়ারীতে পানি উঠে যায়। পানি উঠে গেলে শ্যালো মেশিন দিয়ে কোয়ারীর পানি অপসারণ করে শ্রমিকরা পাথর উত্তোলন করে।
এর বাইরে ‘শিবের নৌকা’ পদ্ধতিতেও পাথর উত্তোলন করা হয়। এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের উপায় হচ্ছে-একটি খালি নৌকায় শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন লাগানো হয়। ইঞ্জিনের পাখা পানির নীচে ঘুরতে থাকে। পাখা অনবরত ঘুরতে ঘুরতে মাটি নরম হয়ে পাথর বেরোতে থাকে। পাথর শ্রমিকেরা ঝঁকির সাহায্যে পাথর নৌকায় তুলে। এ পদ্ধতিতে সহস্রাধিক শ্রমিক পাথর উত্তোলন করে থাকে। এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের দৃশ্যও খুব উপভোগ্য।
ভোলাগঞ্জ ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনঃ
ভোলাগঞ্জে রয়েছে একটি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন। বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের জিরো লাইনে এই কাস্টমস স্টেশনের অবস্থান। এ স্টেশন দিয়ে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই ল্যান্ড স্টেশন দিয়ে প্রধানত বাংলাদেশে চুনাপাথর আমদানী করা হয়। ভারত থেকে চুনাপাথর বোঝাই শত শত ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। চুনাপাথর আমদানির দৃশ্য পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর যাওয়ার উপায়ঃ
বাস যোগে সিলেটঃ
ঢাকা
থেকে সিলেটের দূরত্ব ২৪৩ কিঃ মিঃ । ঢাকার গাবতলী,ফকিরাপুল,মহাখালী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি বাস ছেড়ে যায় ৷ বাস গুলো সকাল থেকে রাত ১২.৪৫
পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় পরপর সিলেটের উদ্দেশ্য ছেড়ে যায় ৷ ঢাকা সিলেট রুটে সৌদিয়া, এস আলম পরিবহন, গ্রীন লাইন পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ,
ইউনিক সার্ভিস, এবং এনা পরিবহনের বাস চলাচল করে । এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে উত্তরা, টঙ্গী ঘোড়াশাল
হয়ে সিলেট যায় । এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা । নন এসি বাসের ভাড়া ৪৭০
থেকে ৫০০ টাকা।
বাস আপনাকে সিলেটের কদমতলী,হুমায়ন চত্বর অথবা আম্বরখানা বাস স্ট্যান্ডে নামিয়ে দিবে সেখানেই সিনজি রিজার্ভ করে ফেলবেন । যদি সিনজি না পান তবে আম্বরখানা বাস স্ট্যান্ড হতে বিমান বন্দর সড়ক এর দিকে ১ টা সিএনজি স্ট্যান্ড আছে সেখানে চলে যাবেন আশাকরি সিএনজি পেয়ে যাবেন।
ট্রেন যোগে সিলেটঃ
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস যায় সিলেটের উদ্দেশ্য। প্রতিদিন দুপুর ২ টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস , শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪ টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ০৯ঃ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।
চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন
সকাল ৮টায় সিলেটের উদ্দেশে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস। শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত
৯টায় যায় উদয়ন এক্সপ্রেস। ভাড়া নেয় ৩১৫ টাকা থেকে ১২৮৮ টাকা।
ঢাকা থেকে সিলেট ট্রেনের টিকেট মূল্য:
১১০০ টাকা(এসি বার্থ), ৭৩৬ টাকা(এসি সিট), ফার্স্ট ক্লাস বার্থ ৬৪০ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস সিট ৪২৫ টাকা. স্নিগ্ধা ৬১০ টাকা, শোভন চেয়ার ৩২০ টাকা, শোভন ২৬৫ টাকা, সুলভ ১৬০ টাকা। ট্রেনে গেলে রাত ৯ঃ৫০ এর উপবন এক্সপ্রেসে জাওয়াটাই সবচেয়ে বেস্ট , কারণ ঘুমটা ট্রেনেই সেরে নিতে পারবেন। উপবন এক্সপ্রেস আপনাকে ভোর ৫ঃ৩০ মিনিটে সিলেট নামিয়ে দিবে।
বিমান যোগে সিলেটঃ
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স, ইউনাইটেড এয়ার, নভো এয়ার,রিজেন্ট এয়ার এবং ইউএস বাংলার বিমান প্রতিদিন সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে যায় । টিকিটের মূল্য ৩,২০০ থেকে শুরু করে ৭,০০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে বিভিন্ন ক্লাস ভেদে।
সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ যাওয়ার উপায়ঃ
বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে সিলেট শহরের আসতে হবে। সিলেট কদমতলি বাস স্ট্যান্ড অথবা সিলেট রেলওয়ে স্টেসন থেকে সিএনজি নিয়ে চলে যাবেন সিলেটের আম্বরখানা মজুমদার পয়েন্টে, ভাড়া নিবে প্রায় ৫০ টাকা। আম্বরখানা মজুমদার পয়েন্টে ভোলাগঞ্জ গামী BRTC দোতলা বাস পাবেন। BRTC দোতলা বাস সরাসরি ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ট্রলার ঘাট পর্যন্ত যায় , ভাড়া নেয় জন প্রতি ৬০ টাকা এবং সময় লাগে প্রায় এক ঘন্টার মতো । প্রতি ১ ঘন্টা পর পর BRTC বাস ভোলাগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে ভোলাগঞ্জের সিএনজি পাবেন। আম্বরখানা থেকে ভোলাগঞ্জ ট্রলার ঘাট পর্যন্ত সিএনজি লোকাল ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে(শুধু যাওয়া)। চাইলে সিএনজি রিজার্ভ নিয়েও যাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে যাওয়া আসা মিলে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। তবে অবশ্যই দরদাম করে নিতে হবে। ১ সিএনজিতে ৫ জন বসতে পারবেন ।
ভোলাগঞ্জ ট্রলার ঘাট থেকে ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্টঃ
সাদা পাথর (Sada Pathor) ট্রলার ঘাটে ইঞ্জিন চালিত নৌকা পাবেন। আপনাকে সাদাপাথর জিরো পয়েন্টে (Zero Point) যেতে হলে নৌকা ভাড়া করতে হবে। এক্ষেত্রে ট্রলার রিজার্ভ ভাড়া ৮০০ টাকা নিবে। ১ ট্রলারে ৮ জন যাওয়ার নিয়ম , সেই হিসাবে জন প্রতি খরচ পড়বে ১০০ টাকা করে। ট্রলার আপনাকে সাদা পাথর নিয়ে যাবে। সেখানে আপনি ২ ঘণ্টা থাকতে পারবেন। কারণ ট্রলার রিজার্ভ দেয় ২ ঘণ্টার জন্য। গোসল করার জন্য আপনি এক্সট্রা জামাকাপড় নিয়ে যেতে পারেন । জমা কাপড় পরিবর্তন করার জন্য সেখানে ভালো ব্যাবস্থা আছে। কাপড় পরিবর্তন করার জন্য জন প্রতি ১৫ টাকা নিবে । ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্টে টয়লেট, ওয়াসরুম এর ভালো ব্যাবস্থা রয়েছে।
![]() |
ছবিঃ ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ট্রলার ঘাট |
উৎমাছড়া ও তুরংছড়া - ভ্রমণ গাইডঃ
ভোলাগঞ্জের কাছাকাছি আরো দুটি সুন্দর পর্যটন স্পট উৎমাছড়া আর তুরংছড়া । তাই ভোলাগঞ্জে গেলে আমাদের সাজেশন থাকবে এই ২টি স্পট ঘুরে আসার জন্য , উৎমাছড়া যাওয়ার জন্য ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরে যাওয়ার ট্রলার ঠিক করার সময় মাঝিকে বলে নিবেন সে ক্ষেত্রে অল্প কিছু ভাড়া বেশি দেয়া লাগবে। নৌকা আপনাদের ভোলাগঞ্জে গুরিয়ে পরবর্তীতে দয়ারবাজার নামিয়ে দিবে । দয়ারবাজার থেকে সিএনজি , অটোরিকশা অথবা বাইকে চেপে যাবেন ছড়ার বাজার। ভাড়া নিবে ৪০-৫০ টাকা । তারপর ছড়ার বাজার থেকে ২০-২৫ মিনিট পায়ে হাটলে পৌঁছে যাবেন উৎমাছড়া পয়েন্টে। বলতে গেলে উৎমাছড়ার অবস্তান একদম ইন্ডিয়াতেই..! ছড়ারবাজার নেমে মানুষকে জিজ্ঞেস করলেই বলে দিবে উৎমাছড়া যাওয়ার রাস্তা। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি হচ্ছে উৎমাছড়া। মেঘ পাহাড়ের মিষ্টি খেলা কাছ থেকে দেখতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে সিলেট জেলার উৎমাছড়ায়।
এবার তুরংছড়া যাওয়ার পালা। তুরংছড়া যাওয়ার পুরোটা পথ হেঁটে যেতে হবে। আপনাদের সঙ্গ দিবে খুব কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়। প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট হাটলে আপনারা পৌঁছে যাবেন তুরংছড়া। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে পাথর সাজিয়ে রেখেছে তুরংছড়াকে। আর সেই সাজানো পাথর দাপিয়ে বয়ে যাচ্ছে পাহাড়ি ঢলের স্বচ্ছ পানি। আপনারা চাইলে চরারবাজার থেকে বাইক নিয়েও তুরংছড়ার কাছাকাছি যেতে পারবেন বাইক ভাড়া নিবে প্রায় ১০০ টাকা ।
যেখানে খাবেনঃ
সকালে সিলেট নেমে প্রথমে চলে যাবেন সিলেট জিন্দা বাজার সেখানে পানশী হোটেল অথবা ৫ ভাই রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা সেরে নিবেন । পানশীতে হোটেলে অবশ্যই বিভিন্ন প্রকারের ভর্তা এবং কবুতরের মাংস খেতে ভুলবেন না। পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে রুটি দিয়ে গরুর নিহারি এবং ভুনা চিকেন খিচুড়ি বেশ জনপ্রিয় । ভোজনবাড়ীতে বিভিন্ন প্রকার মাছ বিখ্যাত। সকালের নাস্তা হিসেবে সকালে আপনি মুরগি খিচুরি খেতে পারেন ৪০ টাকা করে প্লেট । ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর ঘাঁটে ভালোমানের খাবারের হোটেল নেই । তবে কোন রকমে মাছ,ডাল, ভর্তা ভাত খাওয়ার জন্য সাধারন মানের কিছু হোটেল পাবেন । দুপুরের খাবারের জন্য ভোলাগঞ্জের নৌকা ঘাটের কাছে জয় বাংলা নামে ১ টি খাবারের হোটেল আছে সেখানে কম টাকায় ভালো মানের খাবার পাবেন যেমনঃ গরু মাংস, দেশি মুরগী, হাঁসের মাংস, বাইং মাছ এগুলোর জেকোন ১ টি আইটেমের সাথে ৭-৮ রকমের ভর্তা সবজি এবং আনলিমিটেড ডাল ভাত দিয়ে প্যকেজ নিবে ১৫০ টাকা নিবে । অথবা যাওয়ার পথে কোম্পানীগঞ্জ সদরে আলম হোটেল, দেশ বন্ধু এবং মায়া রেস্টুরেন্ট সহ বেশ কয়েকটি মাঝারি মানের খাবারের হোটেল পাবেন দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য এইসব হোটেলই একমাত্র ভরসা । রাতে আপনি পানসী রেস্টুরেন্ট/৫ ভাই রেস্টুরেন্টে ভাত বা বিরিয়ানি যাই খান সেটা আপনার উপর নির্ভর করে, তবে ৩০০ টাকার মধ্যে আপনি ভালো খাবার খেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেনঃ
ভোলাগঞ্জে জেলা পরিষদের একটি রেস্ট হাউস আছে সেখানে থাকতে হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নিতে হয়। এ ছাড়া ভোলাগঞ্জ থাকার জন্য তেমন কোন ভাল ব্যবস্থা নাই। আপনি ভোলাগঞ্জ দর্শন শেষ করে সিলেটে এসে ভালো মানের হোটেল পাবেন।
সারাদিন বেড়ানো শেষে রাতে এসে থাকতে হবে সিলেটে। সিলেটে থাকার মত অনেকগুলো হোটেল আছে,সিলেটে আপনি আপনার প্রোয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী যে কোন ধরনের হোটেল পাবেন। কয়েকটি পরিচিত হোটেল হল হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা, কায়কোবাদ ইত্যাদি। তবে ঈদের সময় সিট সংকট থাকতে পারে তাই যাওয়ার ২/৩ দিন আগে এডভান্স বুকিং দিলে ভালো হয়৷ লালা বাজার এলাকায় কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত রেস্ট হাউস আছে৷
লালা বাজার এলাকায় কম ভাড়ায় অনেক হোটেল পাবেন। হোটেল অনুরাগ সিঙ্গেল রুম ৪০০ টাকা ২ জন থাকা যাবে ১ রুমে । ৩ বেডের রুম ৫০০ টাকা ৪ জন থাকা যাবে । এ ছাড়া দরগা রোডে অনেক হোটেল রয়েছে যেখানে রুম ভাড়া ৫০০ থেকে শুরু ।
সিলেট শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল আছে। শহরের নাইওরপুল এলাকায় হোটেল ফরচুন গার্ডেন ০৮২১-৭১৫৫৯০। জেল সড়কে হোটেল ডালাস ০৮২১-৭২০৯৪৫। ভিআইপি সড়কে হোটেল হিলটাউন ০৮২১-৭১৮২৬৩। লিঙ্ক রোডে হোটেল গার্ডেন ইন ০৮২১-৮১৪৫০৭। আম্বরখানায় হোটেল পলাশ ০৮২১-৭১৮৩০৯। দরগা এলাকায় হোটেল দরগাগেইট ০৮২১-৭১৭০৬৬। হোটেল উর্মি ০৮২১-৭১৪৫৬৩। জিন্দাবাজারে হোটেল মুন লাইট ০৮২১-৭১৪৮৫০। তালতলায় গুলশান সেন্টার ০৮২১-৭১০০১৮, ইত্যাদি। এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে ৪ হাজার টাকায় রাত যাপনের ব্যবস্থা আছে।
সিলেট শহরে থাকার আবাসিক হোটেল:
▶️ হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল (বন্দর, শিশুপার্কের কাছে): ০১৭৩১৫৩৩৭৩৩, +৮৮০৮২১২৮৩৩৪০৪
▶️ হোটেল নির্ভানা ইন (রামের দিঘির পাড়, মির্জা জাঙ্গাল, সিলেট): +৮৮০৮২১২৮৩০৫৭৬, ০১৭৩০০৮৩৭৯০, ০১৯১১৭২০২১৩, ০১৭১১৩৩৬৭৬১
▶️ হোটেল স্টার প্যাসিফিক (ইস্ট দরগাহ গেইট): ০১৭১৩৬৭৪০০৯, ০১৯৩৭৭৭৬৬৩৩, ০৮২১-২৮৩৩০৯১
▶️ হোটেল অনুরাগ (ধোপা দীঘি নর্থ): ৭১৫৭১৭, ৭১৪৪৮৯, ০১৭১২০৯৩০৩৯
▶️ হোটেল সুপ্রীম, জাফলং রোড, মিরাবাজার, সিলেট-৩১০০, মোবাইল: ০১৭১১১৯৭০১২, ফোন: ৮৮-০৮২১-৭২০৭৫১, ৮১৩১৬৯, ৮১৩১৭২, ৮১৩১৭৩, ৮১৩১৬৮
▶️ হোটেল সানফ্লাওয়ার (বন্দর, শিশুপার্কের কাছে): ফোন:৮৮-০৮২১-৭১৩৯১৪
▶️ হোটেল এশিয়া (বন্দরবাজার): ০১৯২২৫৯৫৮৪১, ০১৯২২৫৯৫৮৪০
▶️ সুরমা ভ্যালি গেস্ট হাউস (জেলা প্রশাসক/পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পাশে): ০১৭১৬০৯৫৮৩৬
▶️ হোটেল সিলেট ইন (মিরবক্সটুলা): ফোন: ৮৮-০৮২১-৮১১৯৪৫
▶️ হোটেল আল-আরব: হযরত শাহজালাল (র: ) মাজার শরীফ পূর্ব দরগাহ্ হেইট, সিলেট,ফোন: ০৮২১-৭২৪০৫৯, ০১৭২১৮১২৬৬২
▶️ হোটেল উর্মি: হযরত শাহজালাল (র: ) মাজার শরীফ পূর্ব দরগাহ্ হেইট, সিলেট, ফোন: ০৮২১-৭১৪৫৬৩, ০১৭৩৩১৫৩৮০৫
রিসোর্ট:
▶️ নাজিমগড় রিসোর্ট : ফোন: ০১৯১৬২৭১৯৩৫, ০১৭২৯০৯৭৮৪৯
▶️ জাকারিয়া স্টেট: ফোন: ০১৭১৬৮১০১৪৪
#সিলেট_ভ্রমন
Vlog Tag: sylhet bholaganj,ratargul sylhet,ratargul swamp forest cost,shada pathor sylhet,sylhet one day tour,one day tour in bangladesh,ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর,sylhet travel guide,সিলেট,রাতারগুল,রাতারগুল জলাবন,sadapathor and ratargul,one day sylhet tour,one day tour plan,sylet tour plan,low budget tour plan,সিলেট ভিডিও,সিলেটি গান,sadapathor and bolaganj,meghalaya tour,meghalaya,সাদা পাথর এবং রাতারগুল
0 Comments